লালবাতি, ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি

প্রথমে গাড়িতে যথেচ্ছ লালবাতির ব্যবহার। পরে আবাসনের রক্ষণাবক্ষেণ। পরপর দু’দিন দুটি বিষয়ে প্রধান বিচারপতি উষ্মা প্রকাশ করেন বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি। 

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৫:০৬
Share:

প্রথমে গাড়িতে যথেচ্ছ লালবাতির ব্যবহার। পরে আবাসনের রক্ষণাবক্ষেণ। পরপর দু’দিন দুটি বিষয়ে প্রধান বিচারপতি উষ্মা প্রকাশ করেন বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি।

Advertisement

প্রশাসনের একাধিক সূত্রে জানানো হয়েছে, শনিবার প্রথমে নিজের গাড়ি থেকে লালবাতি খোলার নির্দেশ দেন তিনি। তারপর বুঝিয়ে দেন, বিধি ভেঙে সকলের যথেচ্ছ লালবাতি ব্যবহার তাঁর পছন্দ নয়। রবিবার বিচারপতিদের আবাসনের রক্ষণাবক্ষেণ নিয়ে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন বলে প্রশাসনের একটি অংশের দাবি। সূত্রের দাবি, তা নিয়ে প্রধান বিচারপতির ধমকও খেতে হয়েছে।

পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার থেকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কর্তা, জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিক সকলেই প্রধান বিচারপতি ক্ষোভের মুখে করেছেন বলে জেলার আধিকারিকদের একাংশের দাবি।

Advertisement

জলপাইগুড়ির জুবলি পার্কের সদ্যনির্মীত বাংলোতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এবং আরেক বিচারপতি রয়েছেন। সেই বাংলোর শৌচাগারে ছোপ ছোপ দাগ দেখে ‘ক্ষুব্ধ’ প্রধান বিচারপতি একে একে সরকারি কর্তা, নির্মাণকারী এজেন্সিকে তলব করেন বলে খবর।

জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “প্রধান বিচারপতি কেন বকুনি দিয়েছেন, তা নিয়ে আমরা কেউই সংবাদমাধ্যমে বলতে পারব না। তবে ভবিষ্যতে আরও সর্তক থাকতে হবে।”

আবাসনে সমস্যা রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে। প্রধান বিচারপতি আধিকারিকদের যে সময় ক্ষোভ জানাচ্ছিলেন সে সময় একটি পাখা চালু করলে স্ক্রু খুলে পড়ে যায় বলে দাবি। তাতে আরও শঙ্কিত হয়ে পড়েন সরকারি কর্তারা। কাজের গুণমান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। এই ক্ষোভের কথা কিছু ক্ষণের মধ্যেই নবান্নে পৌঁছে যায় বলে খবর।

জলপাইগুড়ির জুবলি পার্কের আবাসনে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি। রবিবার সকাল থেকে কখনও পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার, কখনও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বাস্তুকারদের ঢুকতে দেখা বিচারবিভাগের এক কর্মীর দাবি, কোনও আবাসন নতুন হলে তাতে অপরিচ্ছন্ন ছোপ থাকার কথা নয়। বিশেষত শৌচাগার স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া উচিত। ওই কর্মীর কথায়, “এ সব বিষয়ে প্রশাসনের সর্তক দৃষ্টি রাখা উচিত ছিল।”

গত শুক্রবারই প্রধান বিচারপতি শিলিগুড়ি পৌঁছেছিলেন। ছিলেন মৈনাক অতিথি নিবাসে। সেখানে থাকা বেশিরভাগ গাড়িতেই লালবাতি লাগানো ছিল বলে দাবি। তা দেখে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানান বলে দাবি। নিজের গাড়ির লালবাতিও খুলিয়ে দেন।

এক পুলিশ অফিসারের মন্তব্য, “প্রধান বিচারপতি বললেন, লালবাতি সকলে ব্যবহার করতে পারেন না। নিয়ম জানতে হয়। প্রধান বিচারপতি লালবাতি খুলে ফেলার পর মুহূর্তে সব গাড়ি থেকে লালবাতি খোলা হয় অথবা ঢেকে দেওয়া হয়।”

গত শনিবার প্রধান বিচারপতি, অন্য বিচারপতিদের গাড়ি লালবাতি ছাড়াই যখন সার্কিট বেঞ্চের ভবনে যাচ্ছিল, সে সময় মন্ত্রী থেকে কয়েকটি জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের লাল এবং নীলবাতি লাগানো গাড়ি রাস্তার দু’পাশে রাখা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন