Goalpokhar

শিশু দিবস: কাকভোরেই ধান কাটতে মাঠে ছাত্রেরা

গোয়ালপোখরের একটি হাই স্কুলের ছাত্র আলমগিরের বাবা দিনমজুর। মা অসুস্থ। তাই বাড়তি আয়ের খোঁজে মরসুমে ধান কাটার কাজে নেমে পড়েছে। কাজ শেষে কিছু টাকা হাতে পেয়েই খুশি আলমগির।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

গোয়ালপোখর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২২ ০৯:০১
Share:

‘শৈশব’: পড়াশোনা নয়, রোজগারের খোঁজই রোজকার রুটিন। বালুরঘাটের পাগলিগঞ্জ এলাকায়। ছবি: অমিত মোহান্ত

মেরেকেটে সপ্তম শ্রেণি। এখন আর বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। সকাল হলে কাঁধে স্কুল ব্যাগের বদলে হাঁসুয়া নিয়ে কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়েছে ১৩ বছরের আলমগির (নাম পরিবর্তিত)। সোমবার, ১৪ নভেম্বর ছিল শিশু দিবস। আলমগিরদের এই দিনটা অবশ্য ধান খেতে হাঁসুয়া নিয়েই কেটে গেল। তারা জানেই না, শিশু দিবস কী!

Advertisement

গোয়ালপোখরের একটি হাই স্কুলের ছাত্র আলমগিরের বাবা দিনমজুর। মা অসুস্থ। তাই বাড়তি আয়ের খোঁজে মরসুমে ধান কাটার কাজে নেমে পড়েছে। কাজ শেষে কিছু টাকা হাতে পেয়েই খুশি আলমগির। পড়া বাদ দিয়ে এই কাজে কেন? ‘‘না হলে খাওয়া জুটবে না’’, বলেই এক মনে ধান কাটতে থাকে ছেলেটি।

করণদিঘি, চাকুলিয়া, ডালখোলা, গোয়ালপোখর ও ইসলামপুরের গ্রামে গ্রামে ভোর হতেই খুদে পড়ুয়ারা নেমে পড়ছে ধান কাটার কাজে। করোনার জেরে, অনেক সাধারণ পরিবারে অনটন দেখা দিয়েছিল। সেই থেকে এখনও বই থেকে দূরে আলমগিরেরা। করণদিঘির বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণির রফিক (নাম পরিবর্তিত) ধান কাটতে কাটতে বলে, ‘‘এই সময়ে ধান কাটলে ক্ষতি কী! একশো থেকে দু’শো টাকা হাতে পাওয়া যায়।’’

Advertisement

সামনেই পরীক্ষা। গরহাজিরা নিয়ে চিন্তা কাটছে না শিক্ষকদের। বাড়ি-বাড়ি যেতে শুরু করেছেন কিছু স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কিছু স্কুল অভিভাবকদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করছে। কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের দাবি, উপস্থিতির হাল খারাপ। ক’দিন পরে পরীক্ষা। চাকুলিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব দে বলেন, ‘‘ক্লাসের হাজিরা দেখে যারা আসছে না তাদের নামের তালিকা তৈরি করে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে খোঁজ শুরু হবে।’’ কিন্তু এ ভাবে শিশু শ্রমিকেরা কাজ করছে, প্রশাসনের নজর নেই কেন? জেলা শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা বিশেষ করে এই ধানের মরসুমে এলাকার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সতর্ক করে। জেলা শ্রম দফতরের আধিকারিক বিদিশা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের এ ভাবে মাঠে নামিয়ে দেওয়া একেবারেই অনুচিত। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন