দিল্লি যাবে ছিটমহল সমন্বয় কমিটি

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার প্রত্যাশা নিয়ে দিনভর অপেক্ষার পরেও দেখা হয়নি। আর এই নিয়েই ছিটমহলে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি এর জন্য দায়ী করেছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে। অহলুওয়ালিয়ার পাল্টা দাবি তৃণমূলের সঙ্গে বিনিময় কমিটির যোগ রয়েছে, সে জন্য এমন কথা বলছেন তাঁরা।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২১
Share:

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার প্রত্যাশা নিয়ে দিনভর অপেক্ষার পরেও দেখা হয়নি। আর এই নিয়েই ছিটমহলে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি এর জন্য দায়ী করেছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে। অহলুওয়ালিয়ার পাল্টা দাবি তৃণমূলের সঙ্গে বিনিময় কমিটির যোগ রয়েছে, সে জন্য এমন কথা বলছেন তাঁরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য ছিটমহলের আরেকটি সংগঠনের সঙ্গে মঙ্গলবার দেখা করেছেন।

Advertisement

এ দিকে সীমান্ত সফরে আসা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হওয়ায় দিল্লি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা নিল ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎও করতে চান তাঁরা। কমিটির পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, সংসদের চলতি অধিবেশনেই ওই বিল পাশ হবে। তা না হলে তাঁরা মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিল্লি গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন।

কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত দাবি করেন, পুনর্বাসন সহ যে বিষয়গুলি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিরোধ রয়েছে তা সমাধানের রাস্তা তাঁদের কাছে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরতে চান তারা। মঙ্গলবার বাংলাদেশের তিনবিঘা করিডর পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বাংলাদেশি ছিটমহল বালাপুখুরিতে গিয়ে ছিটমহলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার কর্মসূচি ছিল রাজনাথের। শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। দীপ্তিমান বলেন, “আমরা খুব উৎসাহী ছিলাম এই প্রথম কেন্দ্রীয় কোনও মন্ত্রী ছিটমহলের এত কাছে ঘুরে গেলেন। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তিনি বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পারতেন। আমাদের তরফ থেকে কিছু বিষয় তাঁকে জানানোর ছিল। তাও জানানো যেত। তা না হওয়ায় অনেকেই হতাশ।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হওয়ার জন্য সরাসরি দার্জিলিং এর সাংসদকে দায়ী করে তিনি বলেন,‘‘বিএসএফের তরফ থেকে ১২ জনের তালিকা তৈরি করা হয়। নিরাপত্তা বলয় পর্যন্ত ১২ জনকে নিয়ে যাওয়া হলেও বাধা দেন অহলুওয়ালিয়া।’’ যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দেন সাংসদ।

Advertisement

আজ, বৃহস্পতিবার কোচবিহারের জেলাশাসক পি উলগানাথনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পাঠাবে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি। কমিটির দাবি, ভারতীয় ছিটমহলগুলি থেকে যে বাসিন্দারা এপারে আসবেন তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য ইতিমধ্যে ৬৬ একর জমি তৈরি করেছেন তাঁরা। তাঁদের সমীক্ষা অনুযায়ী, ওপাশ থেকে ৭৩৪টি পরিবার এপারে আসবেন।

দুই দেশ মিলিয়ে ১৬২টি ছিটমহল রয়েছে। এর মধ্যে ৫১ টি বাংলাদেশি ছিটমহল এবং ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল রয়েছে। নাগরিকত্ব না থাকায় ছিটমহলের মানুষরা জীবনযাপনের ন্যূনতম পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরেই ছিটমহল সমস্যার সমাধানের দাবিতে সরব হয়েছে একাধিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দল। সম্প্রতি রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার ওই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ায় এবং বাংলাদেশ সরকারও এই ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করায় আশার আলো দেখতে পান ছিটমহলের বাসিন্দারা। এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের তিনবিঘা সফর নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন