ব্যাঙ্ক ডাকাতির তদন্তে সিআইডি

বাগডোগরায় ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় তদন্ত ছাড়তে চলেছে বাগডোগরা পুলিশ। আগামী ১-২ দিনের মধ্যে মামলার তদন্তভার সিআইডি-র হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে সোমবার শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়ে দিয়েছেন। পুলিশের দাবি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডাকাতি, খুন-সহ নানা মামলা রাজ্য পুলিশের সিআইডির হাতেই সাধারণত তুলে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৬ ০২:১৩
Share:

বাগডোগরায় ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় তদন্ত ছাড়তে চলেছে বাগডোগরা পুলিশ। আগামী ১-২ দিনের মধ্যে মামলার তদন্তভার সিআইডি-র হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে সোমবার শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশের দাবি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডাকাতি, খুন-সহ নানা মামলা রাজ্য পুলিশের সিআইডির হাতেই সাধারণত তুলে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রাজ্যে জড়িয়ে থাকা মামলাগুলির ক্ষেত্রে ফরেন্সিক থেকে বিভিন্ন স্পেশালাইজড ইউনিট সিআইডির হাতে থাকায় মামলা এগিয়ে নিয়ে যেতে সিআইডির সুবিধা হয়। সেখানে অনেক সময়ই থানার অফিসারদের পক্ষে রোজকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অন্যান্য কেস সামলে অনেক সময়ই বাইরের রাজ্যে গিয়ে তদন্তে সময় দেখা সম্ভব হয় না।

এদিন পুলিশ কমিশনার বলেছেন, ‘‘আমরা দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করেছি। ঝাড়খন্ডের দল এতে জড়িত। দুই জনকে ধরাও হয়েছে। বাইরের বিভিন্ন রাজ্যে বাকিদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় পুলিশের বদলে সিআইডি এই ধরনের মামলাগুলি তদন্ত করে থাকে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চিঠি দিয়ে মামলাটি তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, বাগডোগরা পুলিশ দৈনন্দিন দায়িত্ব পালন করেনি বলেই জাতীয় সড়কে ধারে আড়াই ঘন্টা ধরে অপারেশন চালিয়ে পালাতে পারে দুষ্কৃতীরা। এদিনই শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য ওই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে পুলিশের সঙ্গে মিলে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছেন।

মেয়রের কথায়, ‘‘মানুষের নিরাপত্তা পুলিশ আর দিতে পারছে না। পুলিশের নজরদারি ঠিকঠাক ছিল না বলেই এত বড় ঘটনা ঘটেছে। এখন শিলিগুড়ি পুলিশ নিজেরাই কিছু পারবে না বুঝে মামলা সিআইডিকে দেবে। তবে সিআইডি-র তো রাজ্য পুলিশই। তাঁরাও কতটা কী করবে তা নিয়েও সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।’’ পুলিশ ব্যর্থ বলেই মামলা ছেড়ে দিতে চলছে বলে মনে করছেন নকশালবাড়ি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অমিতাভ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘বাগডোগরা পুলিশ পুরোপুরি ব্যর্থ। নজরদারি থেকে মামলা কোনও কিছু ওদের দিয়ে হচ্ছে না বোঝা যাচ্ছে, তাই হয়ত কমিশনারকে সিআইডি-র উপর ভরসা রাখতে হচ্ছে। তবে তাতেও কী হবে, সেটাই এখন দেখার।’’

গত রবিবার ঝাড়খন্ডের সাহেবগঞ্জ জেলা থেকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি নিয়ে আসে। পুলিশ সূত্রের খবর, তাদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করেই পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনায় ৬ জন জড়িত ছিল। পলাতক সকলেই ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা। রবিবার রাতেই ঘটনাস্থল-সব কোনও কোনও এলাকায় দলটি ছিল তা ধৃতেরা পুলিশকে দেখিয়েছে।

ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকেরাও আলাদা করে অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহক অমল শিকদার, কানাইলাল জৈন’রা বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের তরফে ১৬জন গ্রাহককে লকার লুঠের কথা জানানো হয়েছে। এর পরে কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।’’

তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কটির আঞ্চলিক প্রবন্ধক উমেশ চন্দ্র গুছাইত। তাঁর দাবি, ‘‘ব্যাঙ্কের শাখাটির স্বাভাবিক কাজকর্ম ধীরে ধীরে শুরু হয়েছে। আমরা উচ্চ পর্যায়ে সব জানিয়েছি। সেখান থেকে বিশেষ টিম গড়ার কথা বলা হয়েছে। ওই টিমের অফিসারেরা যে সব লকার লুঠ হয়েছে তার গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন