দাবি: গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মোর্চার মিছিল শালুগাড়ায়। রবিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
আদিবাসীদের হাঙ্গামার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা শনিবার ব্যবসা বন্ধ ডেকেছিলেন। বন্ধও ছিল সর্বাত্মক। কিন্তু সেখানেই থেমে না থেকে রবিবার ফের বন্ধ ডাকে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ। আর সেই বন্ধ ঘিরে এ দিন রায়গঞ্জের দুটি ব্যবসীয় সংগঠনের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে।
আদিবাসী হাঙ্গামায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ও সংগঠনের কর্তাদের উপরে লাঠিচার্জে অভিযুক্ত পুলিশের শাস্তির দাবিতে শনিবারই বন্ধ ডেকেছিল দু’টি ব্যবসায়ী সংগঠন পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এবং মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। তার পরে রবিবারও আবার বন্ধের ডাক দেয় মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। চেম্বার এই ধর্মঘটকে সমর্থন করেনি। তাদের বক্তব্য, একই দাবিতে দু’দিন ধরে ব্যবসা বন্ধ করে রাখার কোনও মানে হয় না।
শুধু দোকানপাটই নয়, এ দিনের বন্ধে গোলমালের ভয়ে শহরে বেসরকারি বাস চলাচলও বন্ধ ছিল। বাসমালিকরা ঝুঁকি নিয়ে বাস রাস্তায় নামাতে চাননি।
চেম্বারের সম্পাদক জয়ন্ত সোম বলেন, ‘‘শনিবারই জেলার পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা দু’টি ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন। দেওয়া হয় নিরাপত্তার আশ্বাসও। তার পরে কেন আবার বন্ধের ডাক?’’
মার্চেন্টের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীর পাল্টা দাবি, শনিবার রায়গঞ্জের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকে। তাই ব্যবসা বন্ধের কোনও প্রভাবই সে দিন শহরে পড়েনি। মার্চেন্টের তরফে আরও বলা হয়, আন্দোলনের সময়ে পুলিশ যে সংগঠনের কর্তাদের পিটিয়েছে, তার প্রতিবাদও জানানো হয়েছে এ দিনের বন্ধে। এ দিন বিকেলে অবশ্য পুলিশের আশ্বাসে বন্ধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রায়গঞ্জের বাসস্ট্যান্ডে হাঙ্গামা বাধায় আদিবাসীরা, সেই ধর্ষণে জড়িত সন্দেহে এ দিন শহরের উকিলপাড়া থেকে আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, যুবকের নাম পান্না সরকার। সে পেশায় গাড়িচালক। বাড়ি কোচবিহারের ভাগনি এলাকায়। ধর্ষণকারীরা তার গাড়ি ব্যবহার করেছিল বা সে-ও ওই ঘটনায় জড়িত ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হল।
পুলিশ সূত্রের খবর, জেলার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি জয়ন্ত পালকে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিআইজি-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জয়ন্তবাবু এ দিনই রায়গঞ্জে এসে জেলা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিস্তারিত
কথা বলেন।
পাশাপাশি, এ দিন বিকেলে রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক থেন্ডুপ নামগিয়েল শেরপা আদিবাসীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ধর্ষণের ঘটনায় আর এক অভিযুক্তকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানিয়ে তাঁদের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখারও অনুরোধ করেন।
পুলিশ সুপারের দাবি, সবার সহযোগিতায় শহরে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে এসেছে।