হামলা: নাজিরহাটে বিজেপির কার্যালয়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের পর একাধিক দোকান ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। রবিবার সকাল থেকেই দোকানপাট বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামেন ব্যবসায়ীরা। মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। দিনহাটার এসডিপিও মানবেন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী দফায় দফায় চলে রুট মার্চ করে। এসডিপিও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দিনহাটার মহকুমাশাসক শেখ আনসার আহমেদ বলেন, ‘‘শান্তি ফিরিয়ে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দিনহাটা ২ ব্লকের নাজিরহাটে বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের মহামিছিলের পরই দলের জেলা কার্যকারী সভাপতি সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাকে ঘিরে শনিবার সন্ধ্যায় উত্তেজনা ছড়ায়। রাতেই নাজিরহাট বাজারে বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে এ দিন সকাল থেকে ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের ব্যবসা বন্ধের ডাক দেন। এলাকায় উত্তেজনা ছড়ালে এ দিন সকাল থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। হাটবাজার দোকানপাট সব কিছু বন্ধ থাকে। বন্ধ থাকে গাড়ি চলাচলও।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘‘শনিবার বিকেলে এলাকায় তৃণমূলের মিছিল শেষে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাতে দুষ্কৃতীরা বাজারে ঢুকে ওষুধের দোকান থেকে শুরু করে বেশ কিছু দোকানে ভাঙচুর চালায়। দোকানের ভিতরে থাকা মালপত্র বাইরে ফেলে দেওয়া হয়।’’ অবিলম্বে বাজারে এই হামলা বন্ধ না হলে ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের ব্যবসা বন্ধ চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের তরফে তাপস ঘোষ, প্রশান্ত বর্মণ, মিজানুর রহমান প্রমুখ বলেন, ‘‘রাজনীতির নামে গন্ডগোল হামলার সঙ্গেই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’ বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল তাদের কার্যালয়ে হামলা চালায়। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নাজিরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গেই দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক গণ্ডগোলের জেরে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আক্রমণের তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানানো হয়েছে। মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, ‘‘অবিলম্বে পুলিশ দোষীদের খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করলে ব্যবসায়ীরা টানা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।’’ নাজিরহাটের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ, সোমবার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির দফতরে জরুরি সভার ডাক দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে খবর, সভায় হামলায় ঘটনাকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতেই নাজিরহাটে একাধিক দোকান ভাঙচুর করা হয় বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন। দিনহাটার এসডিপিও মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘‘এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’