বায়না কম, দামও পাচ্ছেন না িশল্পী

প্রশ্ন উঠছে, বাজেট কেন কমাচ্ছে পুজো কমিটিগুলি? কেন পুজো কমিটির কর্তারা সবাই সস্তায় প্রতিমা খুঁজছেন?

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৭
Share:

ব্যস্ত: প্রতিমায় মাটির প্রলেপ। ময়নাগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

পুজো দোরগোড়ায়। কিন্তু পুজোকে ঘিরে নানা প্রশ্নের টানাপড়েন চলছে কুমোরটুলিতে।

Advertisement

প্রশ্ন উঠছে, বাজেট কেন কমাচ্ছে পুজো কমিটিগুলি? কেন পুজো কমিটির কর্তারা সবাই সস্তায় প্রতিমা খুঁজছেন? তবে কি দেশের নানা শিল্পক্ষেত্রে পড়া মন্দার কোন আঁচ এসে পড়ল আলিপুরদুয়ার জেলার পুজোতেও? তা যদি বাস্তব হয়, সেক্ষেত্রে প্রতিমা বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতিমা তৈরির খরচ আদৌ উঠবে তো? সব প্রতিমা বিক্রি হবে তো? এমন নানা প্রশ্নই ঘুরছে জেলাজুড়ে।

আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া নোনাই নদীর ধারেই বসবাস শহর বা শহর লাগোয়া এলাকার মৃৎশিল্পীদের বেশিরভাগের। রবিবার দুপুরে সেখানেই নিজের মূর্তি গড়ার জায়গায় দুর্গা প্রতিমাতে প্রলেপ দিচ্ছিলেন যুবক মিঠুন পাল। বংশ পরম্পরায় এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি। বাপ-ঠাকুরদার আমলের অনেক গল্পও শুনেছেন। কিন্তু প্রতিমার বিকিকিনি নিয়ে কথা শুরু হতেই যেন হতাশার সুর মিঠুনের গলায়, “এ বছর প্রতিমা বায়না দিতে আসা সকলেই তো বলে চলছেন, মাটির জিনিস। এত দাম কেন? প্রতিমা তৈরির মাটি থেকে শুরু করে কাঠ, খড়, রঙ— প্রতিমার সাজের উপকরণের দাম সবই যে হু হু করে বাড়ছে, তা ক্রেতাদের বোঝাই কি করে বলুন তো?”

Advertisement

একই সুর আরেক মৃৎশিল্পী তারাপদ পালের গলায়, “এ বার আমাদের প্রতিমা শিল্পীদের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। কারণ জানি না। তবে এটুকু বুঝতে পারছি, যাঁরা বায়না দিতে আসছেন তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই সস্তায় প্রতিমা খুঁজছেন। আদৌ প্রতিমা তৈরির খরচ উঠবে কি না সেটাও বুঝতে পারছি না।”

নোনাই নদীর ধারেই প্রতিমা তৈরি করেন আরেক মৃৎশিল্পী গোপাল পাল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার মৃৎশিল্পী সমিতির সভাপতির দায়িত্বও সামলেছিলেন। প্রবীণ ওই শিল্পীর কথায়, ‘‘দেশের অর্থনীতি খুব বেশি বুঝিনা। মন্দা বুঝলেও তার প্রভাব কী বা কেন সেই উত্তরও আমার কাছে নেই। তবে একটা জিনিস বাস্তব, এ বার আমাদের মতো প্রতিমা শিল্পীদের অনেক দুর্ভোগ রয়েছে। কারণ, বহু পুজো কমিটি এখনও প্রতিমার বায়না করতেই আসেনি। অথচ, অন্যান্যবার এর অনেক আগে তাঁরা প্রতিমার বায়না করে যান। ফলে সব শিল্পীর প্রতিমা এবার আদৌ বায়না হবে কি না তা নিয়েও চিন্তা রয়েছে।’’

পরিস্থিতির কথা মানছেন উদ্যোক্তারাও। আলিপুরদুয়ার শহরের দেবীনগর দুর্গাবাড়ি সর্বজনীন পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ কৌশিক দে বলেন, ‘‘এ বছর প্রায় সবাই ব্যবসায় মন্দার কথা বলছেন। ফলে চাঁদা কম উঠছে। তাই প্রতিমা-সহ সব ক্ষেত্রেই বাজেট একটু কাটছাঁট করতে হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন