বন্ধ হয়ে গেল বহুতল বিপণি, কর্মহীন ৩০ জন

পুজোর মুখে সারা দিনে পঞ্চাশ থেকে সত্তর জন ক্রেতা আসছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিপণি খোলা রাখা সম্ভব নয় বলে দাবি তাঁদের। এই বিপণির থেকে কিছুটা দূরের আরেকটি বিপণিও কর্মীদের কয়েক জনকে জানিয়ে দিয়েছে বিজয়া দশমীর দিন বন্ধ হবে, তারপরে খুলবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৮
Share:

প্রতীকী চিত্র। ( আইস্টক)

এ বছর বোনাস দেওয়া হবে সকলকে! এমন ঘোষণা শুনেই কর্মীদের মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়েছিল। কেউ কেউ হাততালিও দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেই ঘোষণা হয়, “কাল থেকে শপিং মল বন্ধ।” কথা হারিয়ে ফেলেছিলেন কর্মীরা। এক কর্মীর কথায়, “মনে হয়েছিল কয়েক হাজার কেজি ওজনের কিছু বুকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটা কথাও বলতে পারিনি” শুধু কিছু চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়েছিল বাতানুকূল শপিং মলের মার্বেল বাঁধাই করা মেঝেতে। পুজোর মুখে বন্ধ হয়ে গেল জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলার একটি তিন তলা শপিং মল। পুজোর মুখে কাজ হারাতে হল জনা ত্রিশেক কর্মীকে।

Advertisement

মল কর্তৃপক্ষের দাবি, দিন দিন ভিড় কমছিল। পুজোর মুখে সারা দিনে পঞ্চাশ থেকে সত্তর জন ক্রেতা আসছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিপণি খোলা রাখা সম্ভব নয় বলে দাবি তাঁদের। এই বিপণির থেকে কিছুটা দূরের আরেকটি বিপণিও কর্মীদের কয়েক জনকে জানিয়ে দিয়েছে বিজয়া দশমীর দিন বন্ধ হবে, তারপরে খুলবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

কদমতলার মোড়ে তিন তলা ঝাঁ চকচকে শপিং মল। এই বিপণির লক্ষ্য ছিল মূলত নিম্ন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা। জামা-কাপড় সহ প্রসাধনী সামগ্রী মিলত। পোশাকের গড়পড়তা দর ছিল ৪৫০ থেকে ৩ হাজার।

Advertisement

কিছু দিন আগেও ভিড়ের ঠেলায় সামনের রাস্তায় যানজট হয়ে যেত। বৃহস্পতিবার ভর দুপুরে দেখা যায় শাটার অর্ধেক নামানো। ভিতরে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যুতের সংযোগ খুলে নেওয়ার কাজ চলছে। বাতানুকূল যন্ত্রগুলি আগেই খুলে নেওয়া হয়েছে। মেঝেতে পড়ে রয়েছে পোশাক ঝুলিয়ে রাখার প্লাস্টিকের হাতল। দোতলায় ডাঁই করা পোশাক। সেগুলি বাক্সে ভরে রাখছেন কর্মীরাই। বাক্সবন্দি হয়ে পোশাক চলে যাবে সংস্থার অন্য কোনও শহরের বিপণিতেই।

এক কর্মীর কথায়, “প্রতিবাদ করে কী হতো! আমরা তো নিজেরাই দেখছিলাম দিন দিন ক্রেতা কমে আসছিল।” কর্মীদের কেউ পেতেন মাসে সাড়ে সাত কেউ বা বারো হাজার টাকা। সংস্থার তরফ থেকে এক মাসের বেতন এবং বাকি পাওনাগণ্ডা হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক তরুণীর কথায়, “এখন অন্য কোনও সংস্থায় গেলে আমাদের বলা হবে, বন্ধ শোরুমের কর্মী। অথচ আমাদের দোষে তো শো-রুম বন্ধ হয়নি। জানি না কেউ কোনও কাজ দেবে কি না।”

তিন দিন আগে কর্মীদের সকলকে নোটিস ধরানো হয়েছে। মলের জলপাইগুড়ির শাখার ম্যানেজার সৌমেন সরকার বলেন, “গত বছর পুজোর দিনে এক এক দিনে ৬০০টি করে ক্যাশমেমো কাটা হয়েছিল। এ বছর সেই সংখ্যা পঞ্চাশ থেকে একশোয় নামে। মনে হচ্ছে, বাসিন্দাদের হাতে নগদ কমে গিয়েছে।”

তৃণমূলের শ্রমিক নেতা স্বপন সরকারের কথায়, “কেন্দ্রের নীতিতে দেশে মন্দা চলছে। তার শিকার হয়ে কাজ হারাতে চলেছেন ত্রিশ জন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন