রেবা কুন্ডু। নিজস্ব চিত্র
নতুন চেয়ারপার্সন বাছতে আগামী সপ্তাহে তৃণমূলের কোচবিহার পুরসভার কাউন্সিলরদের কলকাতায় ডেকে পাঠালেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রাতে কোটি টাকার দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কোচবিহার পুরসভার চেয়ারপার্সন রেবা কুণ্ডু পদত্যাগ করেন। দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে রেবাদেবী সরে দাঁড়িয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে একাধিকবার ফোনে চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর বাড়ি থেকে জানানো হয়, তিনি বাইরে রয়েছেন। তাঁর ছেলে কাউন্সিলর শুভজিৎবাবু ওই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করেছেন রেবাদেবী। সময় মতো পরবর্তী পদক্ষেপের কথা দল জানিয়ে দেবে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৬ সালের শেষের দিকে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারপার্সন রেবাদেবীর বিরুদ্ধে প্রায় দু’কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গুড়িয়াহাটির বাসিন্দা সম্রাট কুণ্ডু অভিযোগ করেন, ভবানীগঞ্জ বাজার উন্নয়ন, হরিজনদের জন্য আবাসনের সংস্কার এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি রাস্তা তৈরির কাজে ওই দুর্নীতি হয়। তা নিয়ে আদালতের নির্দেশে একটি মামলাও রুজু হয় কোতোয়ালি থানায়। ওই ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে যেতেই তিনি পুরসভার চেয়ারপার্সনকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। শেষ পর্যন্ত শনিবার তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন মহকুমাশাসকের কাছে।
সম্রাটবাবু বলেন, “অনেক বড় দুর্নীতি হয়েছে। তার বিচার চেয়েই আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা বলেন, “চেয়ারপার্সনের ইস্তফাই প্রমাণ করে যে তিনি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আপাতত দ্রুত নতুন চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হোক সেটাই চাই।” চেয়ারপার্সন বরাবর তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০ আসন বিশিষ্ট কোচবিহার পুরসভায় বর্তমানে ১৯ জন কাউন্সিলর রয়েছেন (এক জনের মৃত্যু হয়েছে)। তার মধ্যে ৮টি বামেদের দখলে রয়েছে। বাকি ৯ জন তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছেন। ২ জন নির্দল কাউন্সিলর বর্তমানে তৃণমূলেই আছেন। চলতি সপ্তাহে ওই তৃণমূল কাউন্সিলরদের ডাকা হয়েছে কলকাতায়। আগামী ১৫ জুন বোর্ড মিটিং হতে পারে পুরসভায়। তার সাত দিনের মাথায় তলবি সভা ডেকে নতুন চেয়ারপার্সন নির্বাচন করা হবে। চেয়ারপার্সনের দৌড়ে ভূষণ সিংহের নাম এগিয়ে আছে। তিনি অবশ্য বলেন, “ওই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”