শ্রদ্ধা: শিক্ষক দিবসে সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের ছবিতে মালা মুখ্যমন্ত্রীর। দার্জিলিঙে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
পাহাড়ের পর্যটনের বিকাশে একগুচ্ছ পরিকল্পনা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে পাহাড়কে আরও ভাল ভাবে তুলে ধরতে ২০১৯ সালে দার্জিলিংয়ে করা হবে ‘এশিয়ান কালচারাল ফেস্টিভ্যাল’। হোম ট্যুরিজমের প্রসারে তৈরি হচ্ছে মডেল পরিকল্পনা। বুধবার দার্জিলিংয়ের ম্যাল থেকে সে কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এশিয়ার সমস্ত দেশ ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করবে। আমরা প্রতিযোগিতারও আয়োজন করব। ওই উৎসবের মধ্যে দিয়ে দার্জিলিংকে বিশ্ব নতুন করে জানবে। বিদেশের প্রতিনিধিদের সামনে নিজেদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরার সুযোগ পাবে পাহাড়বাসী।’’ মুখ্যমন্ত্রী চান, পাহাড়বাসী নিজেদের ঘরেই পর্যটনের প্রসার ঘটান।
বাড়ি তৈরির জন্য পাহাড়ের গরিব বাসিন্দাদের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে আর্থিক অনুদান দেয় রাজ্য সরকার। জিটিএ এবং পাহাড়ের বোর্ডগুলির মাধ্যমে সেই অনুদান দেওয়া হয়। মু্খ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে টাকা দেওয়া হয়, সেই টাকায় এখন থেকে দু’টি করে ঘর তৈরি করবে বাসিন্দারা। একটি ঘর তাঁরা নিজেদের থাকার জন্য ব্যবহার করবেন, অন্য ঘরটি পর্যটকদের থাকার মতো করে তৈরি করতে হবে। তা হলে একটি ঘর ভাড়া দিয়ে সহজেই আয় করা যাবে। কীভাবে কম খরচে ভালো পরিষেবা দেওয়া যাবে, কীভাবে ঘর তৈরি করতে হবে তাঁর একটি মডেল পর্যটন দফতর তৈরি করে দেবে। সেই মডেল দেখেই কাজ হবে পাহাড়ে। সেক্ষেত্রে যদি আর্থিক অনুদানের পরিমাণ বাড়াতে হয় সেটাও আমরা দেখব।’’ পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে দ্রুত মডেল তৈরি করে জিটিএ-কে দিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
হোম ট্যুরিজমের প্রসারে মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করার জন্য শীঘ্রই জিটিএ-র বৈঠক ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন বিনয় তামাংও। সদ্য গঠিত পাহাড়ের বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান অমর রাই বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মতো ইতিমধ্যেই পাহাড়ের কোথায় কোথায় হোম ট্যুরিজমের সম্ভাবনা রয়েছে, তার তালিকার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কাজ হলে পাহাড়ের গ্রামীণ অর্থনীতি দৃঢ় হবে।’’ নতুন পর্যটন কেন্দ্র খোঁজার কাজও শুরু হয়েছে। বিনয় বলেন, ‘‘সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ সহ পরিকাঠামোগত যদি সমস্যা থাকে সেগুলি সমাধানের ব্যবস্থা হবে।’’
পাহাড়ের বহু জায়গাতে হোম স্টে ট্যুরিজম ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশিস মৈত্র বলেন, ‘‘পাহাড়ে এমন বহু জায়গা আছে, যেগুলির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলনাহীন। অথচ সেই সব এলাকায় হোটেল বা রিসর্ট তৈরি সম্ভব নয়। হোম ট্যুরিজম প্রসারিত হলে সেই জায়গাগুলিতে আমরা পর্যটকদের নিয়ে যেতে পারব। পাহাড়ের অর্থনীতিও পোক্ত হবে।’’