তরুণ সঙ্ঘ মণ্ডপের আলোর সাজ। —নিজস্ব চিত্র।
অন্তত তিন লক্ষ পঁচিশ হাজার নারকেলের মালা, আর তা দিয়েই সাজিয়ে তোলা হয়েছে আস্ত একটা মণ্ডপ। নারকেলের মালাগুলি কোনওটা ফুলের মতো নকশায়, কোনওটা রিংয়ের মতো বা সুবিধা মতো কেটে, তা দিয়েই বিভিন্ন নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপের গায়ে। এরপর রাঙিয়ে তেলা হয়েছে নীল, সবুজ, সোনালি, রুপোলি নানা রঙে। তার উপর আলো পড়লে তার বিচ্ছুরণ মায়াবী পরিবেশ তৈরি করবে। নারকেল মালা দিয়ে এ ভাবেই এ বার কালীপুজোয় চমক আনছে শিলিগুড়ি তরুণ সঙ্ঘ ।
পুজো কমিটির কর্মকর্তা অন্তু দাম ও অনিমেষ সাহা জানান, যা দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এ বারের থিম ‘নারকেল মালায় রঙতুলি, মায়ের পায়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি।’ পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরতেই প্লাস্টিক, থার্মোকল বাদ দিয়ে প্লাইউড, নারকেলের মালা দিয়ে এ ধরনের মণ্ডপ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
নারকেলের মালার মণ্ডপকে বাস্তবায়িত করতে শিল্পীকে ছুটতে হয়েছে সূদূর কেরলে। তা না হলে হাজার হাজার নারকেলের মালা কোথায় পাবেন? কেরলে গিয়ে সেখানে নারকেল থেকে তেল তৈরির কোম্পানিগুলির সঙ্গে যোগযোগ করেন জগদীশ দাস। তাদের কাছ থেকে বরাত দিয়ে নারকেলের মালা আনার ব্যবস্থা করেন। সেগুলিকে মণ্ডপের প্লাইয়ের দেওয়ালে বসাতেও বিস্তর সমস্যা। তার জন্য বিশেষ আঠাও আনতে হয়েছে। ভার ঠিক রাখতে শুধু বাঁশ নয়, লোহার স্তম্ভ দিয়ে মণ্ডপের কাঠামো তৈরি করতে হয়েছে।
অতিকায় নারকেলের মালা উল্টো করে রাখলে যেমন দেখায় মূল মণ্ডপটিও তেমনই। মাথায় ফোঁটা পদ্মের পাপড়ির মতো ছড়ানো কতগুলি অংশ। প্রতিটির শেষে একটি করে প্রদীপ রয়েছে। নারকেলের মালাগুলির ভিতরে এবং বাইরে রঙ দিয়ে গোল, পাপড়ির মতো নকশা আঁকা হয়েছে। শিল্পী জগদীশবাবুর কথায়, ‘‘নারকেলের মালা জোগাড় করার পর সেগুলিকে পালিশ করা এবং নকশা অনুযায়ী কাটতে অনেক সময় লেগেছে।’’ নজরকাড়া মণ্ডপের সঙ্গে কলকাতার কুমোরটুলির প্রতিমা আর আলোকসজ্জায় মেতে উঠবে তরুণ সংঘের পুজো মণ্ডপ।