পাশে: অত্যাচারিত কংগ্রেস কর্মীদের দেখতে বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র
এ বার পুলিশের বিরুদ্ধে ‘আমরা-ওরা’র অভিযোগ উঠল চোপড়ায়। রবিবার চোপড়া থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তথা কংগ্রেসের জেলা পরিষদের প্রার্থী শাহিদুল ইসলাম। অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে হামলার মামলায় তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সোমবার তাঁকে ইসলামপুর আদালতে তোলা হয়। খবর পেয়ে ইসলামপুর ও চোপড়ার গ্রামে যান মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার-সহ কয়েক জন নেতা। তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সরব হন। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ জানাতে যাওয়া প্রার্থীকেই পুলিশ গ্রেফতার করছে! এ কেমন পুলিশ। আমরা রাজ্যপালের কাছে গোটা ঘটনা জানিয়ে হস্তক্ষেপ চাইব।’’
এ দিন আদালতে ধৃত শিক্ষকের জামিনের আর্জি নাকচ হয়ে যায়। এর পরেই তিনি আমরণ অনশনে বসার কথা ঘোষণা করেন। আদালতে বলেন, ‘‘আমি এক জন শিক্ষক। এ ভাবে মামলায় গ্রেফতার করা হল। অথচ আমি নির্দোষ। এমন হলে ছাত্রসমাজে কী বার্তা যাবে?’’ আদালত সূত্রের খবর, বিচারক শিক্ষককে অনশন তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনাচক্রে, ওই শিক্ষক যখন অভিযোগ জানাতে যান, তখন সেখানে ছিলেন চোপড়ার ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অশোক রায়। তিনি বলেন, ‘‘এমন চললে তো থানায় কেউ অভিযোগ জানাতে যাওয়ার সাহসই পাবেন না।’’ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৬, ৩০৭ ৫২৭ ও ৩৪ ধারায় এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী ফিরোজ আহমেদ (ববি) বলেন, ‘‘১৮ এপ্রিল কেস ডায়েরি-সহ নথি পেশ করতে বলা হয়েছে পুলিশকে। তার পরে ফের জামিনের আর্জি জানাব।’’
গত শনিবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া এলাকায় কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যেই ব্যাপক গন্ডগোল ছড়ায়। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে গুলি ও বোমা ছোড়ার অভিযোগ করে। সে দিন দুপুরেই ওই ঘটনার রেশ ছড়ায় চোপড়ার লালবাজার এলাকায়। এখনও চোপড়ার পরিস্থিতি থমথমে।
এ দিন বিকেলে লক্ষ্মীপুর এলাকায় যান কংগ্রেস প্রতিনিধিদের দল। কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা একের পর এক অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন নেতাদের কাছে। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘এলাকায় শান্তি ফেরাতে হবে।’’ ধৃতদের মুক্তির দাবিতে আজ, মঙ্গলবার পুলিশ-প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেবে কংগ্রেস। যদিও তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্য দাবি করেছেন, পুলিশ আইন মেনেই কাজ করেছে। তাঁর দাবি, ‘‘অভিযোগ ছিল বলেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এতে আমি কী বলব! আসলে বিরোধীদের সবটাই অপপ্রচার।’’