মুখোমুখি তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক দীপক সরকার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
পুরভোটের মুখে পথে প্রচারে সৌজন্য দেখালেও তুফানগঞ্জে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে কোচবিহার পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী মীনা তরের সমর্থনে এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি প্রচারে যান তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সুভাষপল্লী এলাকায় অনুগামীদের নিয়ে প্রচার চালানোর সময় ঘটনাচক্রে সদলবলে ওই এলাকায় হাজির হন কোচবিহারের প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক দীপক সরকার। দীপকবাবুর সঙ্গে ছিলেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সোমালি আচার্যও। এক বাসিন্দার বাড়িতে ঢোকার মুখে মুখোমুখি হন যুযুধান শিবিরের নেতাকর্মীরা। রবীন্দ্রনাথবাবু ও দীপকবাবু দুইজনেই পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সৌজন্য বিনিময় করেন।
সেইসঙ্গে দুই নেতা রসিকতাও করেন। রবীন্দ্রনাথবাবুকে বলতে শোনা যায়, ‘ফরওয়ার্ড ব্লকের বাঘ বুড়ো হয়ে গিয়েছে।” যার উত্তরে দীপকবাবু বলেন, “যাই বলুন বাঘে ছুঁলে কিন্তু আঠার ঘা!” উপস্থিত সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় গুঞ্জন। তাঁদের একজন বলেন, ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতীক সিংহ। ওই হিসেবেই সিংহ প্রতীককে বাঘ বলে উল্লেখ করে এমন রসিকতা। ভোটের রাজনীতি এমন হওয়াই উচিত। ওই ব্যাপারে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন বিধায়ক দীপক সরকার বলেন, “ সর্বত্র এমন সৌজন্যের পরিবেশ ফেরানো দরকার।” তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “কোথাও সন্ত্রাস নেই, সবাই নিজের মত প্রচার করছেন। আগে এমন অবস্থা ছিলনা।”
রবীন্দ্রনাথবাবু ওই দাবি করলেও জেলার তুফানগঞ্জে ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন বামেরা। তাঁদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে তুফানগঞ্জ পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী নমিতা দাসের বাড়িতে হামলা চালায় একদল তৃণমূল সমর্থক। নমিতা দেবীর বাড়ির সামনের গেট ভাঙচুর করা হয়। এমনকি প্রচারে না বেরোনোর জন্যও হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার ওই ব্যাপারে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম। দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তমসের আলি বলেন, “ তুফানগঞ্জে লাগাতার সন্ত্রাস করছে তৃণমূল। দলের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। প্রচারে গেলে পা কেটে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। আগে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী প্রশান্ত পালের বাড়িতেও তারা হামলা চালায়। অন্য ওয়ার্ডের প্রার্থীদের রাস্তা আটকে প্রচার বন্ধের হুমকি দেওয়া হয়।” তৃণমূলের তুফানগঞ্জ শহর কমিটির সভাপতি হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মানুষ বামেদের সঙ্গে নেই। নিশ্চিত পরাজয় বুঝেই পরপর ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। কোন প্রার্থীকে প্রচারে বাধা দেওয়া বা বাড়িতে হামলার ঘটনা হয়নি।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”