কোচবিহারে রবি কি একা হয়ে যাচ্ছেন

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ২৪ ও ২৫ নভেম্বর আলাদা আলাদা ভাবে তৃণমূলের দু’টি সভা ডাকা হয়েছিল দিনহাটায়। একটিতে প্রধান বক্তা ছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু, অন্যটিতে বিধায়ক উদয়ন গুহ ও বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। সেখানে সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় ও বিধায়ক মিহির গোস্বামীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪১
Share:

লোকসভা নির্বাচনের মুখে কোচবিহারে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছে বলে শাসক দলের সূত্রেই খবর। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন জেলায় দলের বাকি নেতারা। এমনকি, যাঁরা এক সময় রবিবাবুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তাঁরাও এখন দূরে সরে গিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। একা হয়ে যাচ্ছেন রবিবাবু।

Advertisement

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ২৪ ও ২৫ নভেম্বর আলাদা আলাদা ভাবে তৃণমূলের দু’টি সভা ডাকা হয়েছিল দিনহাটায়। একটিতে প্রধান বক্তা ছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু, অন্যটিতে বিধায়ক উদয়ন গুহ ও বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। সেখানে সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় ও বিধায়ক মিহির গোস্বামীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ওই সভা থেকেই দুই পক্ষের চেহারা সামনে চলে আসার চিত্র তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশে দু’টি সভাই বাতিল করে দেওয়া হয়।

তবে এই প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না। কিন্তু দল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কলকাতায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে শীঘ্রই। বিধানসভার অধিবেশনের জন্য কলকাতা গিয়েছেন উদয়নবাবু, বিনয়বাবু এবং মিহিরবাবু। এই তিন জনের সঙ্গেই সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথবাবুর দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে দল সূত্রে জানা গিয়েছে। কলকাতা গিয়েছেন পার্থপ্রতিমবাবুও। যাঁর সঙ্গে রবিবাবুর দূরত্বের কথা শীর্ষ নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই জানেন। রবিবাবু অবশ্য কোচবিহারেই রয়েছেন। তবে কলকাতায় বাকিদের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতারা আলোচনায় বসবেন বলেই তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, কিছু দিন আগেও উদয়নবাবু ও বিনয়বাবুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর সম্পর্ক ছিল মধুর। যে কোনও অনুষ্ঠানে তাঁদের এক সঙ্গে দেখা যেত। ওই তিন জন এবং বিধায়ক হিতেন বর্মণকে নিয়ে জেলায় চার জনের কমিটিও তৈরি করে। রবিবাবু নিজেই সে কথা জানান। তা নিয়ে দলের অপর গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। বিশেষ করে প্রবীণ নেতাদের অনেকে কেন কোর কমিটতে নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

Advertisement

কিন্তু সম্প্রতি ওই তিন জনের সম্পর্কে ফাটল ধরে। দলের অন্দরের খবর, বিরোধের সূত্রপাত জেলা পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন নিয়ে। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ তিন জায়গাতেই বোর্ড গঠনে বিরোধ অব্যাহত ছিল। জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন উমাকান্ত বর্মণ। কর্মাধ্যক্ষ গঠনের সময়ও কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি বলে দাবি।

উমাকান্তবাবু বনমন্ত্রী বিনয়বাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কিন্তু কর্মাধ্যক্ষের ৯ জনের প্রায় সবাই রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত। রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর অভিযোগ, তিনি পঞ্চায়েত থেকে কর্মাধ্যক্ষ গঠনে কাউকে গুরুত্ব দেননি। এমনকি দল যেখানে বিধায়কদের নিজ নিজ বিধানসভা এলাকায় চেয়ারম্যান করেছেন, সেখানে জেলায় কোনও বিষয়ে তাঁদের কোনও মতামত নেওয়া হয় না। রবিবাবুর অনুগামীদের পাল্টা অভিযোগ, জেলা সভাপতি ও মন্ত্রীর পদ নিতেই একাধিক নেতা সক্রিয়।

তবে গোটা প্রসঙ্গে সব কথাকেই ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রবিবাবু। উদয়নবাবুও বলেন, “এমন কোনও বিষয় নেই।” একই বক্তব্য অন্যদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন