TMCP

দায়িত্ব নিয়ে টানাপড়েন, ক্ষোভ দলে

তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই পদের জন্য নতুন করে নাম বিবেচনা করা হচ্ছে। বিরোধীরা এতে কটাক্ষ করে বলছেন, শাসক দলে বর্তমানে খুনে-মারপিট থেকে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ছাড়া কেউ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫৮
Share:

একজোট: দিনহাটা কলেজে ছাত্রদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

ঘোষণা করেও সাগর রায়কে কোচবিহার জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব দিলেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। তার জেরেই ক্ষুব্ধ কর্মীদের একাংশ। দলীয় সূত্রের খবর, দলেরই অনেকে বলছেন, এমন কাজে দলের মুখ পুড়েছে।

Advertisement

তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই পদের জন্য নতুন করে নাম বিবেচনা করা হচ্ছে। বিরোধীরা এতে কটাক্ষ করে বলছেন, শাসক দলে বর্তমানে খুনে-মারপিট থেকে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ছাড়া কেউ নেই। তাই তাদের মধ্যে থেকেই কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে। এখানে নেতাদের কে কতটা ঘনিষ্ঠ তার উপরেই পদ পাওয়া নির্ভর করছে। দলীয় কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দল যাকে দায়িত্ব দেবে তাঁর সম্পর্কে আগাম কোনও খোঁজখবর রাখছে না। সে জন্যেই পরে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে।

বিরোধীরা তো বটেই, এই ঘটনায় শাসক দলের অন্দরেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। টিএমসিপির কোচবিহার জেলার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন সাবির সাহা চৌধুরী। গত ৪ অক্টোবর দিনহাটা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র যুব তৃণমূল কর্মী অলকনিতাস দাস আক্রান্ত হন। কলেজেই একদল যুবক তাঁকে লোহার রড-লাঠি দিয়ে মারধর করে। ৬ অক্টোবর কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় তাঁর। ওই খুনের মামলায় প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে সাবিরের নাম রয়েছে। অভিযোগ, দলের যুব সংগঠনের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াইয়ের জেরেই অলকনিতাইকে খুন করা হয়। এর পরেই কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাবিরকে বহিষ্কারের কথা জানান। সেই সময় থেকেই ওই পদে কাকে বসানো হবে তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু জানান, কোচবিহারে টিএমসিপির জেলা সভাপতি করা হয়েছে সাগর রায়কে এবং কার্য়করী সভাপতি করা হয়েছে তাপস বর্মণকে। দু’জনই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে পরিচিত। ওই ঘোষণার পরেই অভিযোগ ওঠে, সাগরবাবু একটি খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত। ২০১৭ সালে পুন্ডিবাড়ি পেট্রোল পাম্পের কাছে এক যুবক খুন হন। সেই মামলায় নাম রয়েছে সাগরের। দলের একটি গোষ্ঠী সেই সংক্রান্ত নথিপত্র রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করে জমা দেন। প্রশ্ন ওঠে, যে অভিযোগে সাবিরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল সেই একই অভিযোগে অভিযুক্ত সাগরবাবুকে কেন টিএমসিপির জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিল? সাগরবাবু অবশ্য ওই অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেন। তাঁর দাবি, রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্ত্র করে তাঁর নাম ওই অভিযোগে দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই মামলায় তাঁর নাম নেই।

এই অবস্থায় বুধবারই দলীয় নেতৃত্ব সাগরবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন। নতুন করে ওই পদের জন্যে খোঁজ শুরু হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বা যুব সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় কেউ কিছু বলতে চাননি। দলের জেলার কার্যকরী সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “দল যাকে দায়িত্ব দেবে, আমরা যারা দল করি সবাইকে তা মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে। এর মধ্যে আর কোনও ব্যাপার নেই।” বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্তের কটাক্ষ, “তৃণমূলের এখন এমন অবস্থা ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। যারা ছাত্র রাজনীতি করেন তাঁরা কেউই তৃণমূল আর করবেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন