প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরকে বললেন বিনয়
Congress Meet at Siliguri

‘দৌড়নোর ঘোড়া, আস্তাবলে রাখবেন না’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, বিনয়কে ‘তরুপের তাস’ করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে প্রদেশ কংগ্রেস। তাঁকে দেখে, যাতে ভবিষ্যতে অন্য নেতারা কংগ্রেসে আসতে ভরসা পান।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৪
Share:

কংগ্রেসকর্মীদের জমায়েত। ছবি: স্বরূপ সরকার।

সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া পাহাড়ের নেতা বিনয় তামাংকে সম্মান দিয়ে উত্তরবঙ্গে দলের কাজে লাগাতে উত্তরবঙ্গের জেলা সভাপতিদের নির্দেশ দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

Advertisement

সোমবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের হলঘরে দলের উত্তরবঙ্গের নেতাদের নিয়ে কর্মিসভা অধীর বলেন, ‘‘বিনয় তামাং ভাইকে পেয়েছি। তাঁকে কাজে লাগান। তিনি অনেক বড় মাপের লোক। উত্তরবঙ্গে তাঁর মতো নেতা আমাদের সঙ্গে আসা মানে আমাদের শক্তি কয়েক গুণ বেড়ে গেল। তাঁকে পদ দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। নিশ্চয়ই পদ দেব। পদের থেকে তিনি নিজেই অনেক বড়। তিনি নিজেই একটা পদ। তাঁর পদ লাগে না।’’ তাঁর দাবি, বিনয় কাছ থেকে দেখেছেন, বিজেপির ভণ্ডামি, তৃণমূলের ভন্ডামি। অধীরের কথায়, ‘‘যখন এ নিয়ে বিনয় নিজে বলবেন, তখন মানুষের কাছে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য হবে।’’

বিনয় বলেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে বলেছি, আমি দৌড়নোর ঘোড়া, আমাকে আস্তাবলে রাখবেন না।’’ বিনয় জানান, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে শিলিগুড়ি, তরাই এবং ডুয়ার্সের জন্য যে ন’টি দাবি তিনি করেছিলেন, তার একটারও কাজ হয়নি। ২০২২ ডিসেম্বরে তৃণমূল ছাড়েন। দিল্লিতে গিয়ে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন। বিনয় বলেন, ‘‘এখন আমাদের কাজ হল, কেন্দ্রে যে ফ্যাসিস্ট সরকার রয়েছে সেটা উৎখাত করা। অধীর চৌধুরী দেশের বিষয় দেখেন। আমাদের দায়িত্ব উত্তরবঙ্গ দেখা। আমাদের প্রতিশ্রুতি, আগামী দিনে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার আসন জিতে আমরা তাঁকে দেব।’’

Advertisement

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, বিনয়কে ‘তরুপের তাস’ করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে প্রদেশ কংগ্রেস। তাঁকে দেখে, যাতে ভবিষ্যতে অন্য নেতারা কংগ্রেসে আসতে ভরসা পান। বছরখানেক আগে উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) কংগ্রেসে আসেন। এ দিন কর্মিসভায় উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির দাবি তোলেন আলিপুরদুয়ারের কার্যকরী সভাপতি শান্তনু দেবনাথ, ভিক্টর, মালদহের মোস্তাক আলমরা। অধীর বলেন, ‘‘সব জেলার সভাপতিরা মিলে বসুন, সেটাই কোর কমিটি। নিজেরাই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিন। আমাদের লড়াই তৃণমূল এবং নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে।’’

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘আসলে অধীরবাবু ঢাকের বাঁয়া হয়েছেন। দিল্লিতে সনিয়া গান্ধীর হয়ে, আর এখানে সুকান্ত মজুমদারের হয়ে বলেন।’’

বিনয়ের যোগদানে পাহাড়ে কি কংগ্রেসের শক্তি বাড়বে? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন,‘‘শুধু বিনয় তামাং নয়, পাহাড়ের অন্য নেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। এমনকি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাঁরা বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করেছিলেন তাঁদ‌ের বলেছিলাম, যা-ই করুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ভুল করবেন না। বিজেপিকে এসে এখানে ঘাঁটি গাড়তে দেবেন না। তাঁদের বক্তব্য
ছিল, লোকসভা নির্বাচনের আগেই যদি আমরা বিজেপি-তৃণমূল বিরোধী শক্তি এককাট্টা হই, তা হলে তাঁরা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। এটা একটা প্রক্রিয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন