কালিম্পঙ জেলা হওয়ার পর এ বার শিলিগুড়িকে আলাদা জেলা করার দাবি উঠল। আর সেই দাবিকে সামনে রেখেই আন্দোলন জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে সে কথা জানান দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার। এ দিন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় দলের তরফে প্রচার শুরু হয়েছে বলে জানান। রবিবার সকালে হিলকার্ট রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ওই দাবিতে সই সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। শিলিগুড়ির চারটি ব্লক এবং পুরসভার ৪৭ টি ওয়ার্ড নিয়ে আলাদা জেলার দাবি তুলেছেন তারা।
বর্তমানে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি এবং ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্র কংগ্রেসের দখলে থাকলেও পুরসভায় তাদের মাত্র ৪ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদেও তাদের পরিস্থিতি ভাল নয়। এমন অবস্থায় আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে দলকে চাঙা করতেই জেলা নেতৃত্বকে আসরে নামতে হচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় বাজেট বক্তৃতার সময়েও শঙ্করবাবু শিলিগুড়িকে জেলা ঘোষণার পক্ষে দাবি তোলেন বলে জানিয়েছেন। জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘কালিম্পং জেলা করা হলে শিলিগুড়ি কেন জেলা হবে না। লোক সংখ্যা হোক বা পরিকাঠামোর দিক। সমস্ত দিক থেকেই শিলিগুড়ি জেলা হওয়ার উপযুক্ত বলে আমরা মনে করি। মানুষের সবরকম সমর্থন পাব বলেই আমরা আশা করছি।’’ তাঁর অভিযোগ, বর্তমানে সরকারের এক মন্ত্রী এই শহরের বাসিন্দা। তিনি বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বললেও শিলিগুড়িকে জেলা করার বিষয়ে উদ্যোগী হননি। বরং নানা ভাবে শিলিগুড়িকে বর্তমান সরকার বঞ্চিত করছেন। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান করা হয়েছে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ককে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী করা হয়েছে নাটাবাড়ির বিধায়ককে। তিনি উত্তরকন্যায় এখন আসেনই না বলে অভিযোগ করেন শঙ্করবাবু।
কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৭ মার্চ শিলিগুড়িকে জেলা ঘোষণার দাবিতে নাগরিক কনভেনশনের ডাক দিয়েছে তারা। শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ওই সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা দলের সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়।
নাগরিক সম্মেলনে বিজেপি ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন গণসংগঠন, শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ছাড়াও চিকিৎসক-সহ নানা পেশায় যুক্তদের সামিল করা হবে। বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল হওয়ায় তাদের না ডাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই সম্মেলন চান না তাঁরা। এ ব্যাপারে অবশ্য বিজেপির তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
কুন্তল গোস্বামীর মতো কংগ্রেস নেতারা জানান, বৃহত্তর শিলিগুড়ির অংশ হিসাবে লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা প্রস্তাবিত শিলিগুড়ি জেলার মধ্যে থাকতে চাইলে তাঁদেরও আন্দোলনে সামিল করা হবে।