মুখ থুবড়ে পড়়া অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে জনসংযোগের রাস্তা বেছে নিল মালদহ জেলা কংগ্রেস। আর এ কাজে দলের প্রয়াত দুই নেতা গনি খান চৌধুরী ও প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির শরণ নিলেন জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব।
গ্রামে গ্রামে লোকসভা ভোটের জনসংযোগের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। জেলার কোথাও রক্তদান শিবির, কোথাও স্বাস্থ্য শিবির ও প্রতিবন্ধীদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিলির শিবির, কালীপুজো ঘিরে মেলা ও জলসার মাধ্যমে সেই জনসংযোগ শুরু করেছে তাঁরা। মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন দলের জেলা সভানেত্রী তথা উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম নুর। এ দিনও তিনি সকালে চাঁচল ২ ব্লকের ভাকরি পঞ্চায়েতের মহম্মদপুর প্রাইমারি স্কুল মাঠে রক্তদান ও স্বাস্থ্য শিবিরে গিয়ে জনসংযোগ জারি রাখেন। কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের আবেগকে উসকে দিতে এই ভাকরির শিবির করা হয়েছিল গনি খান, প্রিয়রঞ্জন, গোলাম ইয়াজধানি এবং প্রাক্তন বিধায়ক মহবুবুল হকের স্মৃতিতে। এ দিন তিনি চাঁচলেরই জালালপুরে একটি সংহতি সম্মেলন, ইংরেজবাজারের বুধিয়ায় একটি ধর্মীয় জলসাতেও যান। দক্ষিণ মালদহেও জনসংযোগ শুরু করেছেন সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীও।
বামেদের সঙ্গে সমঝোতা করে গত বিধানসভাতেও মালদহ জেলায় ভালো ফল করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু গত পঞ্চায়েতে জেলায় কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। কংগ্রেসের তথাকথিত দুর্গে ফাটল ধরে দলীয় স্তরে বহুল চর্চিত গণি মিথকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। যদিও ২০১৩ সালের পঞ্চায়েতে এই জেলায় কংগ্রেস প্রথম স্থানে থাকলেও এবার তাঁরা পঞ্চায়েত ভোটে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। প্রথম স্থানে উঠে এসেছে তৃণমূল ও দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। ফলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে গণি জাদুকে ফের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে দলের দখলে থাকা জেলার দু’টি লোকসভা আসন ধরে রাখা কংগ্রেসের কাছে কার্যত চ্যালেঞ্জের মধ্যে দাঁড়িয়েছে। আর তাই দলের দুই সাংসদ সহ নেতৃত্ব আগে থেকেই জনসংযোগের মাধ্যমে লোকসভা ভোটের কার্যত ওয়ার্মআপ শুরু করে দিয়েছেন। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, পুজো মিটতেই দলের তরফে জেলার বিভিন্ন ব্লক ও অঞ্চলগুলোয় ছোটখাট কর্মিসভা শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি যুব ও ছাত্র সংগঠনও কর্মীসভা করছে। শনিবারই মোথাবাড়িতে যুব সংগঠনের তরফে একটি কর্মিসভা করা হয়েছিল। এ দিন সকালে চাঁচল ২ ব্লকের ভাকরি অঞ্চল কংগ্রেস কমিটি মহম্মদপুর প্রাইমারি স্কুলে আয়োজন করেছিল রক্তদান ও স্বাস্থ্য শিবিরের।
সেখানে মৌসমের পাশাপাশি চাঁচল, মালতীপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুরের তিন দলীয় বিধায়ক যথাক্রমে আসিফ মেহেবুব, আলবিরুনি জুলকারনাইন ও মোস্তাক আলম ছিলেন। সেখানে হয় একটি আলোচনাসভাও। পরে তাঁরা জালালপুরে একটি সংহতি সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। মৌসম বলেন, ‘‘লোকসভা ভোট আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জের। তবে আমরা সারা বছরই মানুষের পাশে থাকি।’’