—প্রতীকী চিত্র।
কোচবিহারের উত্তমকুমার ব্রজবাসীর পরে, এ বার আলিপুরদুয়ারের অঞ্জলি শীল। শুক্রবার ফালাকাটার জটেশ্বরের বাসিন্দা ওই বধূকে অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনালের নোটিস দিল পুলিশ। তা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। অঞ্জলি বলেন, “আমার জন্ম অসমে। সেখানে বড় হয়েছি। স্কুলে পড়াশোনা করেছি। বিয়ের পরে এসেছি। সেই সংক্রান্ত নথি জোগাড় করতে বাপেরবাড়িতে কথা বলছি।” আবার শুক্রবার রাতে কোচবিহারের মাথাভাঙা-২ ব্লকের এক ব্যক্তিকে অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল থেকে এনআরসির নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে সমাজমাধ্যমে ছড়ায়।
গত ২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের সমাবেশে হাজির ছিলেন কোচবিহারের উত্তম। দিনহাটার বছর পঞ্চাশের উত্তমকে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে অসম ফরেনার্স ট্রাইবুনাল আইনে এনআরসির নোটিস দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, অঞ্জলিকে নোটিস পাঠানোর বিষয়টিও সেই দিন প্রথম প্রকাশ্যে আসে। সেই সময়ে তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে হইচই পড়ে। পরের দিন কলকাতায় বিষয়টি নিয়ে সরব হন মমতা। তবে ওই নোটিস সেই সময়ে আলিপুরদুয়ারের বদলে ভুল করে কোচবিহারে চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন সকালে আলিপুরদুয়ারে সেই নোটিস পৌঁছয়। তার পরেই তা অঞ্জলির হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। তাতে উত্তমের মতো অঞ্জলির বিরুদ্ধেও বৈধ কাগজপত্র ছাড়া, ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে অসমে থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। আগামী ১৯ অগস্ট অসমের আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নোটিস দেওয়ার সময় স্থানীয় বিজেপি নেত্রী তথা অঞ্জলির পড়শি শিল্পী সরকারের সঙ্গে পুলিশের কথা কাটাকাটি হয়। নোটিস দেওয়ার সময় শিল্পী মোবাইলে ভিডিয়ো করছিলেন। পুলিশ নিষেধ করে। শিল্পীর দাবি, “অঞ্জলির বয়স বছর ৪৪। যত দূর জানি, পনেরো বছর বয়সে বিয়ে হয় ওঁর। বিতর্কিত বিষয় হওয়ায় ভিডিয়ো করে রাখছিলাম।” অঞ্জলির স্বামী নিত্য শীল জানান, নোটিসের বিষয়টি নিয়ে পরিচিতদের থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন তাঁরা।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, “অসমের বিজেপি সরকার এ রাজ্যের বাসিন্দাকে এক্তিয়ারের বাইরে নোটিস পাঠাচ্ছে। এখানকার বিজেপি নেতারা নোটিসকে ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। বড় আন্দোলন হবে।” আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা বলেন, “অঞ্জলি নোটিস হাতে পাওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করলেন। কেমন রাজনীতি হচ্ছে, তা স্পষ্ট।”
অঞ্জলি বলেন, “দ্রুত অসমে যেতে চাই। নোটিস যাঁরা পাঠিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলব।”
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে