হিলিকে করিডর করে বালুরঘাট থেকে বাংলাদেশ হয়ে মেঘালয়ের মধ্যে যোগাযোগের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সামিল হলেন তিন দেশের নাগরিক এবং জনপ্রতিনিধিরা। শনিবার বালুরঘাট নাট্যমন্দির মঞ্চে যৌথ করিডর আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে একটি নাগরিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। বাসিন্দারা হিলি ও মেঘালয় এই দু’টি বঞ্চিত এলাকার অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে হেলিকপ্টারে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
বাংলাদেশ সরকারের তরফে ছাড়পত্রের জন্য আগামী দিনে বাংলাদেশেও এ ধরনের কনভেনশন হবে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দরবার করার এই যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে আহ্বায়ক নবকুমার দাস জানান। তিনি বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে সার্কের কোনও ভূমিকা নেই। যেমন কলকাতা-ঢাকা বাস চালু হয়েছে, তেমনই দু’দেশের সম্মতিক্রমে ওই পথে যোগাযোগের সম্ভবনা রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে মেঘালয় সরকারের অনুমোদন নিয়ে দিল্লিতে দরবারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশভাগের আগে হিলি সীমান্ত দিয়ে তৎকালীন দার্জিলিংমেলে চেপে বালুরঘাটের মানুষ মাত্র ৬ ঘণ্টায় কলকাতা পৌঁছতেন। ওই রেলপথ দিয়েই কোচবিহার, অসম থেকে মেঘালয়ের বাসিন্দাদের কলকাতা-সহ অন্যত্র খুব অল্প সময়ে যাতায়াত চালু ছিল। কিন্তু দেশভাগের পর ওই রেলপথ বাংলাদেশের মধ্যে পড়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ সহজ যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এতে দেশের এক কোণে পড়ে থাকা দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মেঘালয়ের উন্নতির পথ ব্যাহত হয় বলে তাঁদের দাবি। বালুরঘাট-হিলিকে করিডর করে বাংলাদেশের মহেন্দ্রগঞ্জ হয়ে মেঘালয়ের তুরা পর্যন্ত ওই যোগাযোগ চালু হলে বাংলাদেশের মানুষও উপকৃত হবেন বলে নবকুমারবাবু জানান।
মেঘালয়ের বিধায়ক উইনাথসান সাংমা, মহেন্দ্রগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক আব্দুল সালেম, বাংলাদেশের আওয়ামি লিগের আহ্বায়ক শাহিনুর রেজা সাহিন, দক্ষিণ দিনাজপুরের মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা থেকে একাধিক জনপ্রতিনিধি উপস্থিত থেকে দাবির সপক্ষে বক্তব্য রাখেন। পশ্চিমবঙ্গ ও মেঘালয় রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রের কাছে প্রেরিত অ্যাকশন প্ল্যানের উপর ভারত-বাংলাদেশ সরকার সম্মতি দিলে ওই পথ পুনরায় ব্যবহারের সুযোগ মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ।