Coronavirus

উদ্বেগের সঙ্গেই আজ ঘরে থাকা

আজ সকলের একাধিক প্রশ্ন। জরুরি প্রয়োজনে খাবার মিলবে তো? অসুস্থতার কারণে দূরে যেতে হলে ভাড়ার গাড়ি পাওয়া যাবে? ইতিমধ্যেই বেসরকারি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি দোকান-বাজার বন্ধ রাখতে আহ্বান জানিয়েছে। বেশিরভাগ বেসরকারি বাস সংগঠন জানিয়ে দিয়েছে, আর পাঁচটা দিনের মতো তারা বাস চালাবে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৮:৪৮
Share:

ফাইল চিত্র

সারা দেশের সঙ্গে আজ, রবিবার জনতা কার্ফু উত্তরের তিন জেলা কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারেও। কিন্তু শনিবার থেকেই উত্তরের সর্বত্রই একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। তা হল, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আজ না হয় শুধু বাড়ি-বন্দিই থাকা হল। কিন্তু জরুরি পরিষেবাগুলো মিলবে কি? জরুরি প্রয়োজনে খাদ্য সামগ্রী মিলবে তো? অসুস্থতা বা অন্য জরুরি কারণে দূরে যেতে হলে ভাড়ার গাড়ি বা বাস পাওয়া যাবে? একাধিক বেসরকারি সংস্থা রবিবারেও খোলা থাকে, সেই কর্মীদের প্রশ্ন রবিবারের গরহাজিরার মজুরি মিলবে তো?

Advertisement

ইতিমধ্যেই বেসরকারি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি দোকান-বাজার বন্ধ রাখতে আহ্বান জানিয়েছে। বেশিরভাগ বেসরকারি বাস সংগঠন জানিয়ে দিয়েছে, আর পাঁচটা দিনের মতো তারা বাস চালাবে না। রবিবার এমনিতেই অফিস বন্ধ থাকে। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম জানিয়েছে, সরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে। ফলে আজ একরাশ উদ্বেগ নিয়েই সারাটা দিন কাটবে তিন জেলার বাসিন্দাদের।

একাধিক সংগঠনের তরফে জনতা কার্ফুর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। যদিও তিন জেলারই সাধারণ এবং পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, জনতা কার্ফু নিয়ে সরকারি ভাবে তাদের কাছে কোনও নির্দেশ পৌঁছয়নি। এর মাঝে অনেকেই অগ্রিম কেনাকাটা করে রাখলেন। শনিবার দুপুরে এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সন্দীপ দত্ত বলেন, “পরিষেবা অন্যদিনের মতো স্বাভাবিক থাকবে। এখনও কোনও নির্দেশিকা নেই।”

Advertisement

কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক বলেন, “রবিবার শহরের বেশিরভাগ বাজার বন্ধ থাকে। তার উপর জনতা কার্ফুর ঘোষণা হয়েছে। অনেকে শনিবারই কেনাকাটা সেরে রেখেছেন।” কোচবিহারের এক বাসিন্দা বাবলু দাস বলেন, “তেল, আনাজের মতো কিছু জিনিস আগেভাগেই কিনে রাখলাম। জনতা কার্ফুর প্রভাব পড়তে পারে।” শহরের স্টেশন মোড়ের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কথায়, “আমাদের তো দিন আনি, দিন খাই অবস্থা। প্রস্তুতি কী নেব! পকেটে টাকা কোথায়?”

কার্ফু মানতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারও চলছে জোরকদমে। জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির আইটি সেলের পক্ষ থেকে এই প্রচার চালানো হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। জনতা কার্ফুকে অনেকেই ‘মহড়া’ বলে মনে করছেন। ‘লকডাউন’ করা হতে পারে মঙ্গলবার বা বুধবার থেকে। এই আতঙ্ক অনেকেরই। জলপাইগুড়ি পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলর অবশ্য কার্ফুর পক্ষেই। ওই কাউন্সিলর বলেন, ‘‘এছাড়া আর কোনও পথ নেই। সংক্রমণ ঠেকাতে এখন একমাত্র পথ লকডাউন করা। রাজনৈতিক মত বিরোধ থাকলেও দল মত নির্বিশেষে সবাইকে ঘরবন্দি করাটাই জরুরি।’’

জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘জনতা কার্ফু নিয়ে আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ আসেনি। তাই আগাম প্রস্তুতির কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ আলিপুরদুয়ারের জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ডাকা জনতা কার্ফু স্বেচ্ছার বিষয়। কার্ফুর সময় পুলিশ নিয়মমাফিক টহল দেবে। যদি কেউ কোনও সমস্যায় পড়েন, পুলিশকে জানালে সাহায্য করা হবে।’’

চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক তথা আলিপুরদুয়ার টাউন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে জানান, সবাই রবিবার ঘরে থাকবে। জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম প্রধান বাজার দিনবাজারের ব্যবসায়ী সমিতির তরফে বাজারের আনাজ ব্যবসায়ী, মাছ ব্যবসায়ীদেরও আজ দোকান না খুলতে আবেদন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন