নজরদারি: মাস্ক ছাড়া রাস্তায়। বালুরঘাটে ধমক পুলিশের। ছবি: অমিত মোহান্ত
২৪ ঘন্টায় মালদহে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হলেন ৪৪ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্তের মধ্যে মালদহ জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষের স্বামী তথা তৃণমূল নেতাও রয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল ৯৪৫ জন।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, মালদহে কেন এত দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। জেলার দুই শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসন ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ শহর এবং কালিয়াচক, জালালপুর ও সুজাপুরে বুধবার থেকে সাত দিনের জন্য লকডাউন কার্যকর করেছে।
কিন্তু তাতেও কি দ্রুত সংক্রমণ রোখা যাবে? এই প্রশ্নই এখন মালদহ জেলার বাসিন্দাদের পাশাপাশি প্রশাসনের কর্তাদের একাংশেরও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মালদহ জেলায় প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে ২৬ এপ্রিল। তার পর থেকেই সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে চলেছে। প্রশাসনিক হিসেবে, প্রথম দিকে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ জন করে বাড়তে সময় লাগছিল এক মাস থেকে শুরু করে দশ দিনের মতো। কিন্তু এখন ১০০ জন আক্রান্ত হতে সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন বা চার দিন। এ ভাবে কয়েক দিনেই জেলায় আক্রান্তর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জেলায় আশঙ্কা ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, সদর মহকুমাশাসক, একাধিক থানার আইসি থেকে শুরু করে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন জেলায়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে জেলায় আরও ৪৪ জনের লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তাঁদের মধ্যে ১১ জন ইংরেজবাজার ব্লকের, ১০ জন রতুয়া ১ ব্লকের, ইংরেজবাজার শহরের ৭ জন, চাঁচল ১ ব্লকের ৬, দু’জন করে কালিয়াচক ১, মানিকচক ও পুরাতন মালদহ শহরের এবং এক জন করে রতুয়া ২, কালিয়াচক ২, হবিবপুর ও কালিয়াচক ৩ ব্লকের।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা এবং একাধিক চিকিৎসকের মতে, প্রথম যখন লকডাউন বিধি কার্যকর করা হয়েছিল সেই সময় থেকেই অনেকে সেই বিধি যথাযথ ভাবে মানেননি। মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা, বাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার মতো ভুল করা হয়েছে।
আনলক-পর্ব শুরুর পরেও বাজার বা জনবহুল স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা, মাস্ক না পরা, ই-রিকশা থেকে অটোয় গাদাগাদি করে যাতায়াতের মতো ভুল করা হয়েছে। সেই ভুলের খেসারত এখন এ ভাবে দিতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অকারণে মানুষ যেন বাড়ির বাইরে বের না হন সে ব্যাপারে জেলা জুড়ে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে প্রচার করা চলছে। লালারসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সংক্রমণ রুখতে প্রশাসন চেষ্টা করে চলেছে।’’