১৫ দিনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মৃত ১৩৬
coronavirus

খামতি কি পরিষেবায়, এত মৃত্যুতে উঠল প্রশ্ন

রোগীর পরিজনদের একাংশ চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২১ ০৬:৩৩
Share:

ফাইল চিত্র।

মৃত্যু বাড়ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। করোনার সংক্রমণ নিয়ে এ মাসে শুক্রবার রাত পর্যন্ত, অর্থাৎ মাত্র দু’সপ্তাহে এখানে ১৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত মৃত্যু হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে এখানকার চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে। চিকিৎসায় কোনও খামতি থেকে যাচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখারও দাবি উঠেছে। দেখা গিয়েছে, মৃতদের একটা বড় অংশ ভর্তির এক থেকে তিন দিনের মধ্যেই মারা গিয়েছেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের দাবি, অধিকাংশ রোগীই অনেক দেরিতে ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু চিকিৎসার গাফিলতিরও কিছু কিছু অভিযোগ প্রায়শই শোনা যাচ্ছে রোগীর পরিজনদের তরফে।

Advertisement

শুক্রবার জ্বরে আক্রান্ত খেলাঘর মোড়ের বাসিন্দা এক রোগীকে করোনা সন্দেহে ভর্তি করানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে রোগীকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না। অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-এর কাছে নেমে আসার কথা জানিয়ে বারবার অনুরোধ করা হলে ভর্তি করানো হয়। রোগীর পরিবারের সদস্য রুমা দাসের অভিযোগ, বারবার শ্বাসকষ্টে কাশি হচ্ছে দেখে চিকিৎসক জানান, রোগীর টিবি হয়েছে। তবু রাতের কথা ভেবে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পর দিন সকালে সেই রোগীই পরিবারের লোকদের জানান, রাতে তাঁর অক্সিজেনের দরকার থাকলেও মেলেনি। এখানে ভর্তি থাকলে বিপদ হতে পারে। এর পরেই পরিবারের লোকেরা বহু চেষ্টা করে প্রধাননগরের একটি নার্সিংহোমে ব্যবস্থা করে ওই রোগীকে নিয়ে যান। সেখানে অক্সিজেন দেওয়া শুরু হয়। তার মধ্যে এ দিন লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। নার্সিংহোমের চিকিৎসক জানান, দ্রুত অক্সিজেন দিতে না পারলে বিপদ হত। এমন নানা অভিযোগ বিভিন্ন রোগীর পরিবারের।

হাসপাতাল সুপার সঞ্জয় মল্লিককে বারবার ফোন করা হলেও ফোন বেজে গিয়েছে। মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি। স্বাস্থ্য দফতরের উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘অনেকেই দেরি করে ভর্তি হচ্ছেন। শয্যার অভাব হবে না। মানুষ আগে থেকে ভর্তি হোক। তার পরেও কোথাও কোনও সমস্যা হলে নিশ্চয় দেখা হবে।’’

Advertisement

রোগীর পরিজনদের একাংশ চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। কোনও সমস্যা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে গেলে দেখা করা যায় না, কথা বলা যায় না বলে অভিযোগ। ফোন করলেও পাওয়া যায় না বলে দাবি। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে রোগী রেফার করা হয়। নার্সিংহোমে চিকিৎসা করানোর সমার্থ্য নেই এমন অনেকেই এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। তার উপর করোনার প্রাণদায়ী ওষুধ রেমডেসিভির-এর সরবরাহ কম হাসপাতালে। সপ্তাহ দুয়েক আগে জেলা স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালগুলো মূলত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের জন্য ৫০০ রেমডেসিভির চাইলেও সামান্য কিছু পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কতটা সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

আইএমএ’র দার্জিলিং জেলার সম্পাদক শেখর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা দেরিতে আসছেন। তাতে বিপদ হচ্ছেটা সেটা মাথায় রাখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন