Coronavirus in North Bengal

করোনার দায়ে হল না অস্ত্রোপচার

পরিবারের দাবি, সেখানে কার্যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়েছে রোগীকে। দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০৭:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি

তিনি জলপাইগুড়ির বাসিন্দা, পেশায় সরকারি দফতরের ঠিকাদার। সম্প্রতি দুর্ঘটনায় জখম হয়ে মেরুদণ্ডে গুরুতর চোট পেয়েছেন। ঘাড়ের নীচ থেকে শরীর অসাড় হয়ে পড়েছে। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, অস্ত্রোপচার জরুরি। তাই শিলিগুড়িতে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। এর পরেই রিপোর্টে জানা যায়, তিনি করোনা পজ়িটিভ। অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে তাঁকে এই শারীরিক অবস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, সেখানে কার্যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়েছে রোগীকে। দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। অভিযোগ, তার পরে যে সব নার্সিংহোম তাঁকে ভর্তির চেষ্টা করে পরিবার, তারাও না করে দেয়। ওই ঠিকাদারের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমের চিকিৎসক জানিয়ে দেন, তাঁরা এই রোগী ভর্তি নেবেন না।

Advertisement

নার্সিংহোমের তরফে কৌশিক হালদার বলেন, ‘‘চিকিৎসক দেখে মনে করলে তবেই রোগীকে নেওয়া সম্ভব। তাঁরাই তো চিকিৎসা করবেন।’’ ফুলবাড়ি মোড়ের অন্য একটি নার্সিংহোমের চিকিৎসক জানিয়ে দেন, করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও ১৪ দিন না গেলে চিকিৎসা হবে না। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিষয়টি জেনে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ফোন করেন। অভিযোগ, তাতেও বিশেষ কাজ হয়নি। নার্সিংহোমের সিনিয়র ম্যানেজার অপূর্ব বসু বলেন, ‘‘পরের করোনা রিপোর্ট দেখে তবেই রোগী নেবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।’’
শেষ পর্যন্ত রোগী নিতে রাজি হয় হিলকার্ট রোডের একটি নার্সিংহোম। পরিবারের দাবি, ভর্তির পর রোগীর কাছে যেতে চাননি কোনও নার্স বা আয়া। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, তাঁরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। উপায়ন্তর না দেখে শেষে সোমবার রাতে এই মুমূর্ষু রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতার দিকে রওনা দেয় পরিবার।

পরিবারের লোকজন বলছেন, করোনা হলে কি জরুরি অস্ত্রোপচারও করা যাবে না? উত্তরবঙ্গের বিশেষ চিকিৎসা আধিকারিক সুশান্ত রায় বিষয়টি জানার পরে শহরের এক নিউরো-সার্জেনকে দিয়ে রোগীকে দেখানোর ব্যবস্থা করেন। সেই ডাক্তারও জানিয়েছিলেন, দ্রুত অস্ত্রোপচার করা দরকার। সেই ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালের সুপার সঞ্জিত সিংহ বলেন, ‘‘নিউরো-সার্জেন দেখিয়ে যতটা করা যায়, আমরা করেছি।’’ দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘রোগী ভর্তি নেওয়ার জন্য মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে আমি ফোন করেছিলাম। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, এই অবস্থায় অস্ত্রোপচার করা যাবে না।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন