COVID-19

রাতেও অক্সিজেন নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে প্রত্যয়

কেউ চাকুরে, কেউ পড়ুয়া বা কেউ ব্যবসায়ী। সেই থেকেই শুরু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজে সলতে পাকানো।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০৬:৩০
Share:

পাশে: রাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কোভিড আক্রান্তদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রিকু চৌধুরী ও সৌমিলী ।

লকডাউনের সময় ভিন রাজ্য থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। কারও বাড়ি মালদহ হোক বা কারও পাশের জেলা দুই দিনাজপুরে। নারায়ণপুর বাইপাস থেকে শুরু করে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একাধিক জায়গায় টেবিল পেতে দাঁড়িয়ে ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত পরিযায়ীদের হাতে খাবার এবং পানীয় জল তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা। এই কাজ চলেছিল টানা এক মাস। তাঁরা কেউ চাকুরে, কেউ পড়ুয়া বা কেউ ব্যবসায়ী। সেই থেকেই শুরু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজে সলতে পাকানো।

Advertisement

দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। গৃহ নিভৃতবাসে থাকা করোনা আক্রান্ত রোগীর অক্সিজেন স্তর নেমে গেলেও সিলিন্ডার পেতে রীতিমতো কালঘাম ছুটছে বলে অভিযোগ। এ সমস্যায় কিছুটা হলেও পরিত্রাতার ভূমিকায় ওঁরা। রাতে-বিরেতে হোক বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ফোন পেলেই অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে করোনা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন রিকু চৌধুরী, সৌমিলী সরকার, মৃণাল দাস, আতিকুল শেখরা। ‘প্রত্যয়’ নামে একটি সংগঠনও করেছেন নিজেরা। তাঁদের কারও বাড়ি পুরাতন মালদহে বা কারও ইংরেজবাজার শহরে। মূলত ফোনে যোগাযোগ করেই তারা এই অসাধ্য সাধন করেছেন। তাঁদের কাছেই জানা গেল, গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ তাঁরা ফোন পান, হবিবপুরsর আইহোর ৬৫ বছরের এক সংক্রমিতের শরীরে অক্সিজেন স্তর নেমেছে ৮২-তে। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে, দরকার অক্সিজেন। তখন তুমুল ঝড়-বৃষ্টি। স্কুটিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে সেই দুর্যোগেই আইহো যান রিকু ও আতিকুল। সেই রোগী এখন অনেকটা সুস্থ।

অতিমারির এই অসহায় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মালদহে একাংশ অ্যাম্বুলেন্স চালক করোনা রোগী বহনের ক্ষেত্রে মর্জিমাফিক ভাড়া নেওয়া শুরু করেছে বলে অভিযোগ। জানা গেল, এ থেকেও রেহাই দিতে রিকু তাঁর নিজের একটি মারুতি ভ্যানকে করোনা রোগী বহনের কাজে ব্যবহার করছেন। সে ক্ষেত্রে তেল ও চালকের খরচ শুধু নিচ্ছেন তাঁরা। রিকু বলেন, ‘‘মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ব্রত নিয়ে আমরা কয়েকজন কাজ করছি। অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়ার পাশাপাশি কোনও করোনা রোগীর ওষুধের প্রয়োজন হলেও ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছি। রোগীরা সুস্থ হলেই আমাদের সার্থকতা।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন