এই ভবন সংস্কার ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামীণ হাসপাতালের পুরনো বাড়ি মেরামতি ঘিরে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকে। সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অনুমোদিত প্রায় ১৫ লক্ষ টাকায় গত মার্চে ওই মেরামতির কাজটি শেষ হয়। কিন্তু মেরামতির খরচ বেড়ে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকায় পৌঁছেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকার গোপালগঞ্জের বাসিন্দা রজত ঘোষ নামে এক ব্যক্তি তথ্য জানার অধিকার আইনের বলে ওই সংক্রান্ত কাজের কিছু নথি বিডিও অফিস থেকে পেয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলতেই বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
রজতবাবু অভিযোগ করেন, ওই ১৫ লক্ষ টাকার মেরামতির কাজে সর্বনিম্ন প্রায় ৪০ শতাংশ কম হারে এক নির্মান সংস্থাকে কাজের বরাত দিয়ে পরবর্তীতে ওই কাজের বিল প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা করা হয় বলে অভিযোগ। অথচ বাড়তি কাজের ক্ষেত্রে কোনও দরপত্র আহ্বান করা বা সকলকে জানাতে কাগজে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি পত্রিকায় নকল পৃষ্ঠায় টেন্ডার নোটিশ গোপনে ছেপে নথি হিসাবে রাখা হয় বলে অভিযোগ। যা পরে তথ্য জানার আইনের মাধ্যমে হাতে পেয়ে জালিয়াতি নজর আসে বলে রজতবাবু অভিযোগ করেন।
ব্লক কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট নির্মাণ সংস্থার মধ্যে বোঝাপড়া করেই ১৫ লক্ষ টাকার ওই টেন্ডার মূল্যের চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ কম দরে কাজ দিয়ে পরবর্তীতে অতিরিক্ত কাজ করে পুষিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে তিনি নবান্নতে মুখ্যসচিব, দিল্লির ক্যাগ, ভিজিল্যান্স কমিশন এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন। পেশায় ঠিকাদার রজতবাবু এলাকায় বিজেপির সমর্থক বলে পরিচিত। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, তৃণমূল পরিচালিত কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকে হেনস্থা করতে তিনি ওই অভিযোগ করেছেন।
তৃণমূল পরিচালিত কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতি মাহবুর রহমান বলেন, ‘‘বরাহার গ্রামীণ হাসপাতালের পুরনো বেশ কিছু ঘর ও ছাদ মেরামতির বিষয়টি বিডিও ভালো বলতে পারবেন। তবে কাগজপত্র অনুযায়ী সঠিকভাবেই ওই কাজ হয়েছে। আমাদের পঞ্চায়েতর দুর্নাম করতে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’ কুমারগঞ্জের বিডিও ভাস্কর মজুমদার বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। সমস্ত নিয়ম মেনে কাজ হয়েছে। তাছাড়া ১৫ লক্ষ টাকার সংস্কারের কাজ বেড়ে ৩৩ লক্ষ টাকা হয়েছে বলে ভুয়ো অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’ তবে স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে ওই কাজ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের কারচুপি নিয়ে তদন্ত হবে বলে বিডিও জানিয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে।’’