প্রতীকী ছবি
গোপালনগর ও খোঁচাকান্দর মৌজার ম্যাপ বা নকশার দাগ নম্বরে রাস্তা রয়েছে—কিন্তু বাস্তবে রাস্তার কোনও অস্তিত্বই নেই। বরং সেই জায়গায় রয়েছে জমি, খাড়ি, এমনকী বসতবাড়িও।
গ্রামবাসীরা চাইছেন, ওই নকশা অনুযায়ী রাস্তাটি তৈরি হোক। তাতে চারটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হবে। ওই রাস্তাটি তৈরির জন্য গত এক বছর ধরে পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের কাছে আবেদন-নিবেদনও করেছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু কাজ না হওয়ায় এ বার গ্রামবাসীরা নিজেরাই চাঁদা তুলে সেই রাস্তা তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছেন। পাশাপাশি সেখানে খাঁড়ির উপর একটি বাঁশের সাঁকোও তৈরি করতে চান তাঁরা। রবিবার গ্রামবাসীরা মঙ্গলপুরা বাজারে ব্যবসায়ী, বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদাও তোলেন। মালদহের হবিবপুর ব্লকের মঙ্গলপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতে এই রাস্তার চাঁদা তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক।
তৃণমূলের হবিবপুর ব্লক সভাপতি দীপঙ্কর মণ্ডল অভিযোগ করেন, ‘‘আমরাও চাই রাস্তা হোক। কিন্তু চাঁদা তোলার নাম করে সিপিএম রাজনীতি করছে।’’ সিপিএমের নেতা প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘চাঁদা গ্রামবাসীরাই তুলছেন। আমরা তাঁদের দাবির সমর্থন জানিয়ে পাশে রয়েছি। তৃণমূল রাস্তা তৈরির উদ্যোগী না হয়ে আমাদের নামে অপপ্রচার করছে।’’
মঙ্গলপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সলমা বাস্কে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা চাইছি রাস্তাটি হোক, কিন্তু খোঁচাকান্দরের দিকে এক বাসিন্দার বসতবাড়ি পড়েছে। ব্লক প্রশাসনকে সমস্যা মেটাতে অনুরোধ করা হয়েছে।’’ হবিবপুরের বিডিও ফুর্বা দোরজি শেরপা বলেন, ‘‘আমরা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।’’
গোপালনগর, হরিণখোল, কূলাভাঙা ও নিরইল এই চারটি গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, ওই দু’কিলোমিটার রাস্তাটি বাস্তবে থাকলে খোঁচাকান্দরে থাকা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যেতে সুবিধা হবে।
এখন সেখানে আসতে গেলে কেন্দপুকুর হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসতে হয়। আর বিকল্প হিসেবে ঝিনাইপুরি দিয়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরতে হয়। গ্রামবাসী পিয়ারীলাল গুপ্তা, প্রদীপ মণ্ডল, গবেন মুর্মুরা বলেন, ‘‘ওই রাস্তার জন্য গত এক বছর ধরে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিক সকলকেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি।’’ তাঁদের দাবি, ওই রাস্তার নকশার মধ্যে যে গ্রামবাসীদের জমি পড়ছে, তাঁরা রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়তে রাজি।এক ব্যক্তির বাড়ি সেখানে পড়েছে, তাঁর সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু সমস্ত সমস্যা মিটিয়ে রাস্তাটি দ্রুত তৈরির ব্যাপারে পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। তাঁরা বলেন, ‘‘সে কারণে আমরাই চাঁদা তুলে রাস্তাটি তৈরি করতে চাইছি। খাঁড়ির উপরে বাঁশের সাঁকোও তৈরি করতে চাই আমরা।’’