জিসিপিএ

আগুন না জ্বালানোর শর্তে সম্মতি দিল কোর্ট

কোচবিহারে দু’দিন ব্যাপী ‘বীর সূর্য বিশ্ব মহাবীর চিলা রায় জন্মবার্ষিকী’ উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে পারবে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’ (জিসিপিএ)। কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার জিসিপিএ-কে শর্তসাপেক্ষে ওই অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

কোচবিহারে দু’দিন ব্যাপী ‘বীর সূর্য বিশ্ব মহাবীর চিলা রায় জন্মবার্ষিকী’ উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে পারবে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’ (জিসিপিএ)। কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার জিসিপিএ-কে শর্তসাপেক্ষে ওই অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছে। পুলিশ মোতায়েনের জন্য ৫ লক্ষ টাকা প্রশাসনের কাছে জমা রেখে ওই অনুষ্ঠান করা যাবে। তবে, অনুষ্ঠানের জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে রান্নাবান্না করা যাবে না। কেবল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই করা যাবে।

Advertisement

কোচবিহার জেলা প্রশাসন অনুষ্ঠানের অনুমতি না দেওয়ায় জিসিপিএ হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে মামলা দায়ের করেছিল। বুধবার বিচারপতি বসাক আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কার কথা জানিয়ে মামলা খারিজ করে দেন। বিচারপতি বসাকের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে জিসিপিএ বিচারপতি মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে।

জিসিপিএ-র সভাপতি নির্মল রায় জানান, চিলা রায়ের ৫০৭ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুমতি চেয়ে তাঁদের সংগঠনের পক্ষ থেকে গত ২৫ জানুয়ারি প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়। অনুমতি দেওয়া বা না দেওয়া নিয়ে প্রশাসন উচ্চবাচ্য না করায় তাঁরা গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। পরের দিনই কোতোয়ালি থানার ওসি সংগঠনের সম্পাদক পরেশ বর্মনকে চিঠি দিয়ে জানান, পূর্ত দফতরের অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া যাবে না। রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম থেকেও আপত্তি জানানো হয়। মহকুমা শাসকও একটি চিঠি দিয়ে জানান আইন-শৃঙ্খলার কারণে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া যাবে না।

Advertisement

এ দিন আপিল মামলার শুনানিতে সংগঠনের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী সপ্তাংশু বসু ও দেবমিত্রা চন্দ আদালতে জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। গত ১৯ বছর ধরে স্থানীয় রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষদের সংগঠন জিসিপিএ জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে থাকে। কোনও বছরই আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়নি। অনুষ্ঠানটি সাংস্কৃতিক। কোনও রাজনৈতিক সভা নয়। তা ছাড়া যে জায়গায় অনুষ্ঠান করা হবে, সেখানে অনুষ্ঠান করার জন্য পূর্ত দফতরের অনুমতির প্রয়োজন নেই।

রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, জিসিপিএ সরকারি নথিভূক্ত কোনও সংগঠন নয়। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, ওই সংগঠনের ‘নারায়ণী সেনা’ রয়েছে। সংগঠনের বিরুদ্ধে রেল অবরোধ-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া, অনুষ্ঠানের জায়গায় পৌঁছতে হয় সঙ্কীর্ণ রাস্তা দিয়ে। আগুন লাগলে দমকলের সেখানে পৌঁছতে বেগ পেতে হবে।

দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে পুলিশ মোতায়েনের টাকা প্রশাসনের কাছে জমা দিতে হবে। অনুষ্ঠানের অনুমতি মিলেছে জানিয়ে ফের তাঁরা জোরকদমে নেমে পড়েছেন। চারদিকে বৈদ্যুতিক আলোতে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী ক্যাম্পেও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন শুরু হয়েছে।

গ্রেটার কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক পরেশ বর্মন জানান, ‘‘‘উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠান হবে।’’ কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন ও পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল জানান, নির্দেশের নথিপত্র পেলে সেই মতো পদক্ষেপ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন