সম্ভাব্য প্রার্থীর শংসাপত্র নিয়ে সরব সিপিএম

এর আগে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের তপশিলি জাতির সার্টিফিকেট ঠিক নয় বলে পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের পুরসভা নির্বাচনের এক সম্ভাব্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে সরব হল সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

এর আগে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের তপশিলি জাতির সার্টিফিকেট ঠিক নয় বলে পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের পুরসভা নির্বাচনের এক সম্ভাব্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে সরব হল সিপিএম।

Advertisement

দলের জেলার নেতাদের দাবি, এবারে ভোটে পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডটি তফশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। সেখানে তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি রঞ্জন সরকারের প্রার্থী হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তাঁর তফশিলি জাতির সার্টিফিকেট খতিয়ে দেখার দাবি তুলল সিপিএম। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূলের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীর শংসাপত্র নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। উনি প্রার্থী হলেই আমরা সমস্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখার দাবি জানাব।” অশোকবাবু জানান, প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের কাছেও সব জানানো হবে।”

পেশায় আইনজীবী রঞ্জনবাবু ১৯৯৯ সালে পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। সেবার তিনি সিপিএমের প্রবীণ নেতা শান্তি চক্রবর্তীর কাছে হেরে যান। তার পরে ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে রঞ্জনবাবুকে টিকিট দেয়নি দল। দলীয় সূত্রের খবর, এবার রঞ্জনবাবু ২০ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়াবেন তা দলীয় স্তরে চূড়ান্ত হয়ে যায়। ওই ওয়ার্ডটি তফশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হচ্ছে ধরেই তিনি রঞ্জনবাবুকে টিকিট দেওয়া হবে ঠিক হয়েছে। রঞ্জনবাবু নিজের শংসাপত্র দলীয় নেতৃত্বের কাছে জমাও দিয়েছেন। কিন্তু সিপিএম প্রশ্ন তোলায় তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, “কে কোন জাতি বা উপজাতির তা সিপিএম নেতাদের জানার কথাও নয়। ওঁরা তো আর সার্টিফিকেট দেন না।” গৌতমবাবু জানান, রঞ্জনবাবু প্রার্থী হলে মনোনয়ন দাখিল করবেন। কোনও বক্তব্য বা অভিযোগ থাকলে সিপিএম নেতারা স্ক্রুটিনির সময় জানাতে পারেন। আর তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।

পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডটি রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবুর বাড়ির ওয়ার্ড। শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনগার লাগোয়া ওয়ার্ডটি দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের দখলে। গতবার পুরভোটে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হয়েছিল। সেবারও জোটের তরফে অজন্তা বিশ্বাস নামের এক মহিলাকে প্রার্থী করে তৃণমূল। যদিও তিনি সিপিএমের মায়াদেবীর পাসোয়ানের কাছে হেরে যান। এবার ফের মায়াদেবীকেই প্রার্থী করেছেন বামেরা। কংগ্রেসের তরফেও ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। আজ, শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। দল সূত্রের খবর, রঞ্জনবাবুই ওই ওয়ার্ডে টিকিট পাচ্ছেন।

বামেদের অভিযোগ অবশ্যই পুরোপুরি মনগড়া দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা রঞ্জনবাবু। তিনি বলেন, “আমি আইনের ছাত্র, আইনটা অশোকবাবুদের থেকে হয়ত বেশি বুঝি। আসলে উনি নিজের পাড়ায় এবার ভোটে হারবেন বুঝতে পেরে উল্টোপাল্টা কথাবার্তা বলছেন। সবটাই নির্বাচন কমিশন দেখবে। কুত্‌সা রটানো হলে আমরা প্রয়োজনে মানহানির মামলাও করতে পারি।”

তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠার পর কংগ্রেসের তরফে তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করা হয়েছে। বিশেষ করে দলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ শাসক দল তোলায়, এবার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কংগ্রেসও। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুমদারের অভিযোগ, “বিষয়টি আমরাও দেখছি। প্রয়োজনে আমরাও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন