প্রশাসনের কড়া মনোভাব বুঝে নির্ধারিত সময়ের আগেই পথ অবরোধ তুলে নিল সিপিএম।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জুড়ে সকাল ১০টা থেকে আধঘণ্টা পথ অবরোধ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। স্কুল ও অফিস সময়ে বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য সড়ক অবরোধের ফলে যানজট শুরু হতে থাকে। রাস্তার উভয় দিকে যাত্রীবাহী যানবাহন আটকে পড়ে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে কোথাও ১০ মিনিট কোথাও বা ২০ মিনিটের মধ্যে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। গোলমালের আশঙ্কা থাকলেও এ দিন সে রকম কিছু হয়নি।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলায় শান্তিপূর্ণ ভাবে পথ অবরোধ কর্মসূচী সফল হয়েছে। তাঁর দাবি, পুলিশ দলীয় কর্মীদের গ্রেফতার করে অবরোধ তুলে দিয়েছে। কোনও জায়গায় পুলিশের অনুরোধেও সময়ের আগে অবরোধ উঠে যেতে পারে।’’ তবে এ দিনের মতো আগামী দিনেও আমাদের আন্দোলনে জেলাবাসীর সমর্থন পাবে বলে নারায়ণবাবু দাবি করেন। জেলা পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘বংশীহারি ব্লক থেকে বেশ কয়েক জন অবরোধকারীকে গ্রেফতার করে পরে তাদের ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। কোথাও খুব বেশি সময় পথ অবরোধ হয়নি।’’
আমজনতার হয়রানি করে সিপিএমের পথ অবরোধের বিরুদ্ধে বুধবারই প্রশাসন থেকে কড়া পদক্ষেপ করার বার্তা দেওয়া হয়েছিল। ফলে বালুরঘাটে অবরোধ কর্মসূচিতে কট্টর সিপিএম নেতা-কর্মী ছাড়া সাধারণ সমর্থকদের তেমন দেখা যায়নি বলেও জানা গিয়েছে। গঙ্গারামপুরে সুষ্ঠু ও অবাধ পুরভোটের দাবিতে গত শুক্রবার বালুরঘাটে জেলা সিপিএমের চার শীর্ষ নেতা জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপমানিত হন বলে অভিযোগ। জেলাশাসকের বিরুদ্ধে অভব্য আচরণের অভিযোগ তুলে সোমবার সিপিএমের পক্ষ থেকে বালুরঘাটে বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রশাসনিক চত্বরে ঢুকতে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। ওই দু’টি ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার মৌন মিছিলের পর এ দিন ছিল পথ অবরোধ কর্মসূচি। গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুর, হিলি থেকে তপন, কুমারগঞ্জ বিভিন্ন ব্লকে সকাল ১০টা থেকে সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা পথ অবরোধ শুরু করেন।
বালুরঘাট শহরের মঙ্গলপুর এলাকার হিলি মোড়ে নির্ধারিত সময়ে পথ অবরোধ শুরু হয়। সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ওই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন জেলা সিপিএম নেতা অপূর্ব সেন, কল্যাণ দাস, প্রসাদ সরকার, শিশির দে, পরিমল সরকারেরা। প্রথম থেকে হিলি মোড়ের অবরোধস্থলে কোনও পুলিশ ছিল না। ২০ মিনিটের মধ্যে বালুরঘাট থানার দু’জন পুলিশ ইন্সপেক্টর গিয়ে নেতাদের অবরোধ তুলে নিতে বলতেই সঙ্গে সঙ্গে অবরোধ তুলে নেন উপস্থিত সিপিএম নেতারা।
এর পরে সেখানে প্রচুর র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্স গিয়ে পৌঁছয়। পরে দলীয় কার্যালয়ে বসে সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিলেও প্রশাসনের ওই কড়া বার্তায় সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের ওপর প্রথমে কিছুটা প্রভাব পড়েছিল। তা কাটিয়ে জেলাজুড়ে কর্মীরা অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে ঝাঁপিয়েছেন।’’