বাম কার্যালয় খুলছে গোলাপি রং নিয়ে

২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ভাঙামালি বুথেই ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৎকালীন বাম সাংসদ মহেন্দ্র রায়কে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। এ বারের লোকসভা ভোটেও সব বুথে বামেরা এজেন্ট দিতে পারেনি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০২:২০
Share:

প্রস্তুতি: রং করে সেজে উঠেছে সিপিএমের পার্টি অফিস। নিজস্ব চিত্র

বাম আমলে বলা হত, সিপিএমের লোকাল কমিটির অনুমতি ছাড়া জলপাইগুড়ি শহর ঘেঁষা ভাঙামালিতে বৃষ্টিও হয় না। রাজ্যে পরিবর্তনের পরে ভাঙামালির সেই লোকাল কমিটির অফিসটাই পুড়িয়ে দেওযার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সাত বছর পরে ফের দরজা-জানালা বসিয়ে রং করে সেজে উঠেছে সিপিএমের সেই পার্টি অফিস। এ বারের লোকসভা ভোটে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে লিড পেয়েছে বিজেপি। সূত্রের খবর, বিজেপির জেলা অফিস থেকে স্থানীয় বাম কর্মীদের কাছে আশ্বাস গিয়েছে, তৃণমূল হামলা করতে এলে তাঁদের কর্মীরা মোকাবিলা করবেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে পার্টি অফিসে রঙের তদারকি করছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মোক্তাল হোসেন। তাঁকে এই ‘আশ্বাস’ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মোক্তালের উত্তর, “আমাদের লোকগুলোই তো সব বিজেপিতে গিয়েছে।”

Advertisement

২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ভাঙামালি বুথেই ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৎকালীন বাম সাংসদ মহেন্দ্র রায়কে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। এ বারের লোকসভা ভোটেও সব বুথে বামেরা এজেন্ট দিতে পারেনি।

এ বার সেই ভোটে বিজেপি জেতার পরে এলাকার পরিস্থিতি বদলে যায়। বিজেপির প্রভাব বাড়ে। তার পরেই বামেদের কার্যালয়ও খোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকায় বাইক মিছিলও দেখা গেল বিজেপির।

Advertisement

সিপিএমের পার্টি অফিস খুললেও তার রঙে পরিবর্তন এসেছে। সিপিএমের আর পাঁচটি পার্টি অফিসের মতো লাল-আধিপত্য নেই এখানে। দেওয়ালের রং গোলাপি। জানালার পাল্লার বাইরের দিকে ঘন খয়েরি। ভতিরের পাল্লা এবং কাঠের ফ্রেমে গাঢ় কমলা রং। যে রংকে অবশ্য সিপিএম নেতারা কমলা নয় খয়েরি বলেই দাবি করলেন। লাল রং শুধু ভিতরের চার দেওয়ালের নীচের কয়েক ইঞ্চি বর্ডারে।

মোক্তাল অবশ্য বললেন, “যে রং হাতের কাছে পাওয়া গিয়েছে, তা দিয়েই রং করা হয়েছে। রং নিয়ে আমাদের কোনও ছুতমার্গ নেই। পার্টি অফিস সংস্কারে সাধারণ মানুষ চাঁদা তুলে দিয়েছে।”

বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি শ্যাম যাদব বললেন, “এক সময়ে তৃণমূলের ভয়ে ভাঙামালিতে বিরোধীদের পতাকা উঠত না। দীর্ঘ দিন বাদে সিপিএম পার্টি অফিস খুলতে যাচ্ছে। গণতন্ত্র বজায় রাখতে আমরা সব সময় সহযোগিতায় প্রস্তুত রয়েছি।” তৃণমূলের জেলা সম্পাদক তথা এলাকার নেতা মোশারফ হোসেনের দাবি, “সিপিএম বরাবর মিথ্যে অভিযোগ করেছে। এখন সিপিএম নেই, লাল-বিজেপি আছে। বিজেপিই ওই পার্টি অফিস খুলিয়ে দিচ্ছে।”

আগামী রবিবার পার্টি অফিসে কাজ শুরুর কথা। তখন যদি তৃণমূল বাধা দেয়? সিপিএমের দীর্ঘদিনের নেতা মোক্তালের সহাস্য জবাব, “তৃণমূল বিরোধী সাধারণ মানুষ রুখে দাঁড়াবেন, আমি নিশ্চিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন