প্রতিবাদ না হওয়ায় হতাশ সিপিএম কর্মীরা

দলের শীর্ষ জেলা নেতৃত্বকে জেলাশাসকের অপমান ও অভব্য আচরণের অভিযোগের ঘটনায় কোনও প্রতিবাদ না হওয়ায় হতাশ দক্ষিণ দিনাজপুরের সিপিএম কর্মীরা। ওই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও কেন রাস্তায় নেমে দলীয় স্তরে প্রতিবাদ আন্দোলন হল না, শনিবার দলের নিচুতলার কর্মীদের ওই প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়েছে বামেরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনার পরেই আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৫৪
Share:

দলের শীর্ষ জেলা নেতৃত্বকে জেলাশাসকের অপমান ও অভব্য আচরণের অভিযোগের ঘটনায় কোনও প্রতিবাদ না হওয়ায় হতাশ দক্ষিণ দিনাজপুরের সিপিএম কর্মীরা। ওই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও কেন রাস্তায় নেমে দলীয় স্তরে প্রতিবাদ আন্দোলন হল না, শনিবার দলের নিচুতলার কর্মীদের ওই প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়েছে বামেরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনার পরেই আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ফ্যাক্স পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানিয়েছি। এই মুহূর্তে শরিক দলের নেতৃত্ব (আরএসপি) বাইরে থাকায় আমরা আন্দোলন কর্মসূচি নিতে পারছি না। তবে জেলা জুড়ে ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন হবে বলে নারায়ণবাবু দাবি করেছেন।

Advertisement

গঙ্গারামপুরে অবাধ পুরভোটের দাবিতে শুক্রবার দুপুরে বালুরঘাটে জেলাশাসক তাপস চৌধুরীকে স্মারকলিপি দিতে যান দক্ষিণ দিনাজপুরের চার শীর্ষ জেলা নেতা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস, প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অমিত সরকার এবং এবিটিএর জেলা সম্পাদক কল্যাণ দাস। গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের সময় গঙ্গারামপুরের শুকদেবপুরে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট হয়নি বলে অভিযোগে সরব হওয়ায় তারা জেলাশাসকের তোপের মুখে পড়েন বলে অভিযোগ।

নারায়ণবাবু এখনও জেলাশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি ভুলতে পারেননি। এদিনও নারায়ণবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘ জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বাম আমলে ভোটে সন্ত্রাস হতো বলে মন্তব্য করে আমাদের সঙ্গে অভব্য ভাষায় কথাবার্তা বলেন। হাত গুটিয়ে, টেবিল চাপড়ে তিনি বলেন, আমাদের আমলেও ভোটের সময় লোকে বাড়ি থেকে বের হতে পারতো না। আদতে ওই কথা বলে জেলাশাসক বর্তমান তৃণমূল আমলেও ভোটের সময় একই রকম পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। এরকম কথা কোনও জেলাশাসক চেয়ারে বসে বলতে পারেন কিনা জানা নেই।’’

Advertisement

সিপিএম জেলা সম্পাদকের দাবি, ডেপুটেশনের সময় সমস্ত ঘটনা জেলাশাসকের ঘরে বসানো সিসিটিভিতে রেকর্ড হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে তদন্ত করে জেলাশাসকের আচরণ জনসমক্ষে তুলে ধরার দাবিও করেছেন নারায়ণবাবু। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘বিগত ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে বালুরঘাট কেন্দ্রে আমি প্রার্থী ছিলাম। তখন বাম আমল। ভোটের গণনায় কারচুপিতে সহায়তা করার অভিযোগে তৎকালীন জেলাশাসকের দফতরের সামনে টানা একমাস অবস্থান বিক্ষোভ আন্দোলন করেছি। জেলাশাসক অফিসে যাওয়া-আসা করতে পারতেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘নারায়ণবাবুরা জনসমর্থন হারিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে বসায় অপমানিত হয়েছেন। মানুষ সেটা বোঝেন। তাদের হয়ে কেন প্রতিবাদে নামবেন?’’

ভোটের মুখে গঙ্গারামপুর ইস্যুতে নালিশ জানাতে গিয়ে সিপিএম নেতারা কেন বিগত দিনে ঘটে যাওয়া শুকদেবপুরের ভোটের কাসুন্দি ঘেঁটে কার্যত মুখ পোড়ালেন, শরিক দলের অন্দরেও তার চর্চা শুরু হয়েছে। এদিন জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়ের বাইরে গিয়ে শুকদেবপুর নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নারায়ণবাবুরা ঠিক করেননি। আমার ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরায় সমস্ত কথাবার্তা রেকর্ড আছে। চাইলে তা নারায়ণবাবুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন