কলকাতা, শিলিগুড়ির পরে এ বার মালবাজারে পদযাত্রা করলেন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে কার্শিয়াং থেকে রোহিণী পর্যন্ত পাহাড়ি পথেও হেঁটেছেন তিনি। এ দিন মালবাজারের পদযাত্রায় ‘দিদি দিদি’ ডাকের সঙ্গে সঙ্গে উঠে এসেছিল বেশ কিছু দাবিও। রাস্তার মোড়ে মোড়ে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন কোথাও স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা, কোথাও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
মালবাজার শহর লাগোয়া নিউ মাল থেকে পদযাত্রা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। বছর দু’য়েক আগে ডুয়ার্সে সরকারি সভা সেরে শিলিগুড়ি যাবার পথে এই নিউ মাল মোড়ে দাঁড়িয়ে রামযতন পাসোয়ানের দোকান থেকে চা খেয়েছিলেন। পদযাত্রাও নিউ মাল থেকেই করা হবে বলেও জানিয়ে রেখেছিলেন। তবে এ দিন আর মুখ্যমন্ত্রী চা খেতে যাননি। বিকেল ৪টে নাগাদ ধামসা, মাদোল নিয়ে বিরাট মিছিল শুরু হয়ে যায়। ৫ হাজারেরও বেশি সমর্থক মিছিলে পা মেলান বলে দাবি তৃণমূলের।
সুভাষ মোড় চত্বরে এসে মালবাজারের স্বর্ণব্যবসায়ীরা সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। মিছিল ক্যালটেক্স মোড় পেরোতেই বেতন বৃদ্ধির দাবি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সহায়িকাদের দেখা যায়। পুলিশি ঘেরাটোপ টপকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা স্মারকলিপি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে চলে আসেন। স্মারকপত্রটি নিজের হাতেই নেন মুখ্যমন্ত্রীও।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মোট ৪ কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন। মাল নদীর কাছে এসে মিছিল শেষ হয়। কিন্তু বিকাল এক ঘণ্টার এই পদযাত্রার জন্যে পুলিশ ১৪ কিমি পথে যান নিয়ন্ত্রণ করে রাখায় পথচারীদের ব্যাপক ভোগান্তি হয়েছে বলে অভিযোগ করে কংগ্রেস। নাগরাকাটার কংগ্রেস প্রার্থী জোশেফ মুন্ডা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য যানজট হওয়ায় তা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ আকারে জানানো হবে। জোসেফের কথায়, চালসা থেকেও ৪ কিমি দূরে খড়িয়ার বন্দর টিয়াবন এলাকাতে সাধারণ গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় মানুষকে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
বুধবার ডুয়ার্সের নাগরাকাটার সভা সেরে সরাসরি মালবাজারে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। কালচিনি ব্লকের নিমতি এলাকায় তিনটি বিধানসভা এলাকার প্রার্থীদের নিয়ে জনসভা করেন মমতা। সেখানে মমতা প্রত্যাশিত ভাবেই আলিপুরদুয়ারকে নতুন জেলা করার কৃতিত্ব দাবি করে ভোট চেয়েছেন। চা বাগান নিয়ে দায় চাপান কেন্দ্রের উপরে। সিপিএমের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘ওরা দাবি করেছিল, বাংলা ভাগ হতে দেব না। আজ ওদের লজ্জা নেই, আজ ওরা পাহাড়ের কাছে সাহায্য চাইছে।’’
নেত্রী চলে যাওয়ার পরেই আলিপুরদুয়ারের একটি হোটেলে কুমারগ্রামের বিক্ষুদ্ধ নেতাদের একাংশকে নিয়ে আলোচনায় বসেন তৃণমূল নেতা জহর মজুমদার।