আন্তর্জাতিক বাঘদিবস

শীলার নজরে ছানারা

শিলিগুড়ির অদূরে বেঙ্গল সাফারি পার্কে এনক্লোজার (ঘেরাটোপে) রাখা রয়াল বেঙ্গল টাইগারের সেই শিশু শাবকরা মাংস নিয়ে কখনও খেলছে, কখনও বা আবার আলতো করে তাতে কামড়ানোর চেষ্টায় প্রাণপাত করে চলেছে।

Advertisement

স্নেহাশিস সরকার

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৮:০০
Share:

নজরবন্দি: বাচ্চাদের থেকে চোখ সরাচ্ছে না মা। নিজস্ব চিত্র

সদ্য মা হওয়া দেওয়া হচ্ছে সেদ্ধ করা মাংস। কিন্তু শাবকরা তার ভাগ ছাড়বে কেন? কচি থাবা আর সবে ওঠা দাঁত নিয়ে তারাও খেতে চাইছে সেই খাবার। খেতে পারুক না পারুক, তাই নিয়ে মায়ের সঙ্গে খেলতে বাধা কোথায়?

Advertisement

শিলিগুড়ির অদূরে বেঙ্গল সাফারি পার্কে এনক্লোজার (ঘেরাটোপে) রাখা রয়াল বেঙ্গল টাইগারের সেই শিশু শাবকরা মাংস নিয়ে কখনও খেলছে, কখনও বা আবার আলতো করে তাতে কামড়ানোর চেষ্টায় প্রাণপাত করে চলেছে। দিনের অনেকটা সময় তাদের কেটে যাচ্ছে, নতুন খাবারকে আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টায়। ঘেরাটোপে থাকা বাঘ-শিশুদের এমন আচরণ দেখে আপ্লুত বনকর্মীরা। বাচ্চাদের মাংস নিয়ে খেলতে দেখে ‘মা’ শীলা তাদের উপরে তীক্ষ্ণ নজর রেখে চলেছে। এসবের মাঝেই রবিবার বেঙ্গল সাফারি পার্কে পািলত হল ‘আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস’।

এ দিন সাফারি পার্কের উদ্যোগে পার্কে আসা ছোটছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে বাঘের মুখোশ দেওয়া হয়। বেঙ্গল সাফারির তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৪ জুলাই থেকেই আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। বিতর্ক সভা, আলোচনা, গাছ লাগানোর মাধ্যমে নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। এ দিন ছেলেমেয়েদের মধ্যে মুখোশ বিতরণ ছাড়াও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়।

Advertisement

তিন শাবক এখনও মায়ের দুধের উপরই ভরসা করতে হচ্ছে। তাই সংক্রমণ এড়াতে কাঁচা মাংস খাবারের মেনু থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তা মা বাচ্চাদের সুরক্ষার জন্যই। বেঙ্গল সাফারির অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় জানান, কাঁচা মাংস দিলে সেখান থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। তাই কাঁচা মাংস ছ’ঘন্টা ফ্রিজে রেখে তা ঠান্ডা করা হয়। এরপর সেটাকে সেদ্ধ করে বাঘেদের খেতে দেওয়া হয়।’’ তিনি জানালেন, আর দু’-এক মাস বাদেই বাচ্চারা মাংস খেতে শিখে যাবে। তাই স্বাভাবিকভাবেই মাংস নিয়ে তাঁদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। কখনও কখনও বাচ্চাদের তা চিবোতেও দেখা যাচ্ছে।

বেঙ্গল সাফারিতে বাঘেদের জন্য সাধারণত মহিষ এবং মুরগির কাঁচা মাংসই বরাদ্দ থাকে। এক একটি বাঘের জন্য প্রায় সাত কেজি করে মাংস বরাদ্দ থাকে। এই মুহূর্তে সাফারি পার্কে তিনটি বাঘ রয়েছে। এদের মধ্যে শীলা একমাত্র মেয়ে। বাকি স্নেহাশিস ও বিভান ছেলে। বাচ্চা হওয়ার আগে শীলাকে কাঁচা মাংস দেওয়া হলেও বাচ্চা হওয়ার পর সেদ্ধ করা মাংস-ই দেওয়া হচ্ছে। আর সেই মাংস থেকে দু’এক টুকরো নিয়ে সারাদিন মেতে থাকছে তার বাচ্চারা। তবে এখন শীলাকে সাত কেজির পরিবর্তে আট কেজি মাংস দেওয়া হচ্ছে। বেঙ্গল সাফারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাচ্চারা মায়ের দুধ খাওয়ার জন্যই শীলাকে এক কেজি মাংস বেশি খেতে দেওয়া হচ্ছে। তেমনিই, শীলা এবং তার বাচ্চাদের জন্য মেশিনে পরিশোধিত জল খেতে দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন