বেহাল: ভাঙা রাস্তাতেই যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র
কোথাও সাত ইঞ্চি গভীর গর্ত। কোথাও দশ ইঞ্চি। বৃষ্টির হলে সেই গর্তগুলিই কার্যত জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় প্রতিনিয়ত যন্ত্রাংশ ভেঙে বিকল হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকছে যানবাহন। বেহাল রাস্তায় গাড়ি প্রায়ই গাড়ি খারাপ হয়ে যানজট নিত্যদিনের হয়ে উঠেছে মালদহে। পুজোর মুখে মালদহের দশ কিলোমিটার বেহাল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পরিবহণ কর্মী, ব্যবসায়ী, প্রত্যেকেই।
ইংরেজবাজারের সুস্থানী মোড় থেকে পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। এই দশ কিলোমিটার রাস্তা যেতে লাগছে এক ঘণ্টারও বেশি। কারণ দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই পথে জট নিত্যদিনের। যানজট সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশদেরকেও। জাতীয় সড়কের বেহাল দশায় রোজ যানজট হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পুলিশকর্মীরাও। ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “দশ মিটার অন্তর অন্তর জাতীয় সড়কে গর্ত। পণ্য বোঝাই লরি বা অন্য গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে রাস্তার উপরেই দাঁড়িয়ে থাকছে। সেই গাড়ি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত অন্য গাড়িও চলাচল করতে পারছে না।” ফলে মূহূর্তের মধ্যে শতাধিক গাড়ি আটকে থাকায় যানজট লেগেই থাকছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতি বছর বর্ষা আসতেই জাতীয় সড়কের এমন বেহাল দশা ফুটে ওঠে বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা মেরামত করা হয়। তাই বর্ষা আসতেই পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে পাথর বেড়িয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়। বেহাল রাস্তার জন্য শুধু গাড়ির যন্ত্রাংশই নয়, ঘটছে পথ দুর্ঘটনাও। কারণ রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছোট পাথরের টুকরো। গাড়ির চাকায় সেই টুকরো পাথর ছিটকে এসে পথচলতি বাসিন্দাদের গায়ে লেগে দুর্ঘটনা ঘটায়। মালদহের পরিবহণ ফোরামের সদস্য নিমাই বিশ্বাস বলেন, “রাস্তার জন্য আমাদের কাছ থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। এ দিকে রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানোই দায়।’’
পুজোর আগে বেহাল রাস্তা ও বাইপাসের দাবিতে সরব হয়েছেন ব্যবসায়ী সমিতি। মালদহের মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘১২ বছরেও শেষ হয়নি বাইপাস তৈরির কাজ। যার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের। আমরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রককে চিঠি লিখে অভিযোগ জানাব’’। জাতীয় সড়কের মালদহের প্রোজেক্ট ডিরেক্টার দীনেশ হানসারিয়া বলেন, ‘‘বেহাল রাস্তা মেরামত চলছে। এ ছাড়া বর্ষার জন্য বাইপাসের কাজ আটকে আছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই কাজ শেষ করতে পারব।’’