২০ ঘণ্টা পড়ে মৃত রোগীর দেহ, হাসপাতাল জানাল না-বলে চলে গিয়েছে!

চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা পাশ দিয়েই গিয়েছেন। তবু মুখ ঢাকা অবস্থায় করিডরে ২০ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ পড়ে ছিল বলে অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। রোগীর পরিবারের লোকেরা খোঁজ নিলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, রোগী না-বলে চলে গিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৮
Share:

মৃত: পড়ে রয়েছে দেহ।

চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা পাশ দিয়েই গিয়েছেন। তবু মুখ ঢাকা অবস্থায় করিডরে ২০ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ পড়ে ছিল বলে অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। রোগীর পরিবারের লোকেরা খোঁজ নিলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, রোগী না-বলে চলে গিয়েছেন। এমনকী, ওয়ার্ড থেকে পালিয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশে জানানো হয়েছে। পুলিশের কাছে যাওয়ার আগে করিডরে পড়ে থাকা দেহটি কার খোঁজ করতে গিয়েই চমকে ওঠেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। শবদেহের মুখের ডাকা সরাতেই দেখেন তাঁদের পরিজনই মারা গিয়েছেন। মঙ্গলবার তা নিয়েই হইচই বাঁধে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ওপরওয়ালা চাইলে ডেঙ্গি হবে! দোহাই তৃণমূল বিধায়কের

হাসপাতাল এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম প্রকাশ রাই (৩৬)। বাড়ি সিকিমের জোড়থাংয়ে। সিকিমের একটি দুধ সরবরাহ কোম্পানির হয়ে শিলিগুড়ির ডাবগ্রাম এলাকাতেই তিনি থাকতেন। শনিবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় জখম হলে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছিল। ভর্তির পর এবং রবিবার বেলা ১১টায় তাঁর অফিসের কর্মীরা কয়েকজন এসে দেখেও গিয়েছিলেন। এদিন পরিবারের লোকেরা রোগীর খোঁজে এসে দেখেন এই কাণ্ড।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার মৈত্রেয়ী কর বলেন, ‘‘গাফিলতির ব্যাপার নেই।’’ তাঁর দাবি, রবিবার সুখিয়াপোখরির বাসিন্দা আকাশ তামাঙ্গ ও সিকিমের জোড়থাঙের প্রকাশ ওয়ার্ড ছেড়ে নিজেরাই চলে যান। রবিবার দুপুরে দুজনের নামেই পুলিশে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ হয়। তবে মেডিক্যাল কলেজ ফাঁড়ি থেকে জানানো হয় প্রকাশ রাই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে তাঁদের কাছে রবিবার কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। সোমবার করিডরে এক ব্যক্তিকে কাতরাতে দেখে অন্য রোগীর লোকজন ভর্তি করান। আকাশ তামাঙ্গ নামে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। বাস্তবে, তিনিই প্রকাশ রাই। সোমবার তিনি মারা যান।

ময়নাতদন্ত করানোর জন্য দেহটি ওয়ার্ডে করিডরে যেখানে রোগীরা রয়েছেন, সেখানেই রাখা ছিল। এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আকাশ তামাঙ্গের দেহ বলে পুলিশকে ময়নাতদন্তের জন্য জানানো হয়। প্রকাশের কাকিমা নন্দা রাইয়ের দাবি, ‘‘খোঁজ করতে গেলে প্রথমে জানানো হয় প্রকাশ পালিয়েছে। পরে মৃতদেহ দেখে চিনতে পেরে নার্সকে জিজ্ঞাসা করা হলে জানান, নাম ঠিক রয়েছে। ঠিকানা মিলিয়ে দেখতে হবে। প্রকাশের সঙ্গে আকাশের নাম জুড়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।’’ সুপারের কথায়, ‘‘যখন প্রকাশকে পুনরায় ভর্তি করানো হয় তখন বাড়ির লোক ছিলেন না। যাঁরা ভর্তি করিয়েছেন তারা ভুল করে আকাশ তামাঙ্গ বলে ভর্তি করিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন