ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পূর্ণবয়স্ক দাঁতালের দেহ। ছবি: নারায়ণ দে।
আলিপুরদুয়ার থেকে উদ্ধার হল একটি পূর্ণবয়স্ক দাঁতালের দেহ। সোমবার রাতে কালচিনি ব্লকের সাতালি নাকাডালা গ্রামে একটি ধান খেতের মধ্যে দাঁতালটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরা পৌঁছন। মঙ্গলবার সকালে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
বন দফতর ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে দু’টি হাতি জঙ্গল পেরিয়ে চলে এসেছিল গ্রামে। তারা প্রথমে এক মহিলা শ্রমিকের বাড়ি ভাঙচুর করে। ঊষা কুদুর নামে ওই মহিলা বাড়িতে ছিলেন না বলে রক্ষা পান। সেখান থেকে হাতিরা প্রায় ৩০০ মিটার দূরে একটি ধান খেতের দিকে চলে যায়। একটু পরে একটি হাতির চিৎকার শোনা গেলে ধান খেতের দিকে দৌড়ে যান গ্রামবাসীরা। সেখানে পৌঁছে তাঁরা ওই পূর্ণবয়স্ক দাঁতালটির দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। বন দফতরে খবর দেওয়া হয়। বন দফতরের কর্মীরা এসে দাঁতালটির সঙ্গীটিকে খেদিয়ে জঙ্গলে পাঠিয়ে দেন।
চিলাপাতা রেঞ্জের এসিএফ রাম প্রসাদ বলেন, “হাতিরা গ্রামে ঢুকে প্রথমে এক মহিলার বাড়ি ভাঙচুর করে। মহিলার বাড়ির ভাঙা বেড়ার পাশে একটি ছেঁড়া বিদ্যুতের তার পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই দাঁতালটির মৃত্যু হয়েছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়।”
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রায়ই জঙ্গল থেকে হাতি গ্রামে ঢুকে পড়ে। ধান খেত থেকে শুরু করে অন্যান্য গাছ, ঘরবাড়ি সমেত সম্পত্তি নষ্ট করে তারা। বনকর্মীরা জানান, হাতির হামলা থেকে বাঁচতে অনেকেই বাড়ির বেড়ায় বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রাখেন। ঊষাদেবীর বাড়িতে সে রকম তার জড়ানো ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঊষাদেবী অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ির বিদ্যুতের তার দু’-তিন দিন আগেই ছিঁড়ে পড়েছিল। হাতির আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য তিনি বেড়ায় বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রাখেননি। তা ছাড়া, হাতির হামলার ভয়ে তিনি সাধারণত রাতটা থাকেন তাঁর ভাগ্নের বাড়িতে। ওই দিন রাতেও তিনি সেই বাড়িতেই ছিলেন। গ্রামবাসীরাও ঊষাদেবীর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তবে, ধান খেতটি কার তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে।