তদন্তে: সৌম্যদীপের মৃত্যুর পরে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
শিকড়ের টানে একবার বাংলাদেশ যেতে চেয়েছিলেন এলাকার নাম করা ছাত্র সৌম্যদীপ। মঙ্গলবার সকালে মামার সঙ্গে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার কথা ছিল তাঁর। সকাল থেকেই তাই এক নাগাড়ে ফোন করে গিয়েছেন মামা রতন সরখেল। বারবার একই উত্তর ছিল ‘সুইচড অফ’। শেষে যখন খবর পেলেন ততক্ষণে দুনিয়া ছেড়েই চলে গিয়েছেন সৌম্যদীপ।
তাঁর কথা বলতে গিয়ে বারবার কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল রতনবাবুর। কোনওমতে বললেন, “সৌম্য চলে গেল একেবারে অন্য দেশে।”
মঙ্গলবার সকালে দিনহাটা থানার পুলিশ লকআপে সৌম্যদীপ চক্রবর্তীর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে নেশা করে গণ্ডগোল করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। থানায় লকআপে অচৈতন্য হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু মেধাবী এই শিক্ষকের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাথর হয়ে গিয়েছেন মা শেফালিদেবী। তিন সন্তানের জননী প্রাথমিক স্কুলের এই শিক্ষিকা। কয়েক বছর আগেই মৃত্যু হয় তাঁর এক মেয়ের। এ বার হারালেন একমাত্র ছেলেকে। মাঝেমধ্যেই বলছিলেন “আর বেঁচে কী করব।” দিনহাটার বোর্ডিংপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন সৌম্যদীপ। আরেক বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখানে মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তাঁদের বাড়ি ছিল নিগমনগরে। বাবা ধীরেন্দ্রনাথবাবু মারা যায় বছর আটেক আগে। বছর পাঁচেক আগে নিগমনগর ছেড়ে দেন সৌম্যদীপরা।
সৌম্যদীপ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। বছর খানেক আগে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি হয়। তাঁর সহকর্মী শিক্ষক কল্যাণ বর্মন বলেন, “সৌম্য ওই এলাকার নামকরা ছাত্র ছিলেন। তাঁর নাম শুনতাম আমরা। যাদবপুরে পড়াশোনা করেছে। পরে একসঙ্গে চাকরি করেছি। কখনও খারাপ অবস্থায় তাঁকে দেখিনি। খুব খারাপ লাগছে।”