কাওয়াখালি

খোলা গর্তেই মৃতদেহ, নাকাল এলাকা

অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের মৃতদেহ গর্তে ফেলে মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের পিছনের দিকে ওই সমস্ত দেহ গর্তের মধ্যে এক সঙ্গে ফেলে রাখা হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। তা থেকে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মর্গের পিছনের অংশে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া কাওয়াখালি বাজার এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০২:২৯
Share:

এ ভাবেই খোলা জায়গায় পড়ে মৃতদেহ। —নিজস্ব চিত্র

অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের মৃতদেহ গর্তে ফেলে মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের পিছনের দিকে ওই সমস্ত দেহ গর্তের মধ্যে এক সঙ্গে ফেলে রাখা হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। তা থেকে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মর্গের পিছনের অংশে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া কাওয়াখালি বাজার এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, দুর্গন্ধে এলাকার একটি স্কুলেরও ছাত্র-শিক্ষকদের সমস্যা পোহাতে হয় মাঝে মধ্যেই। বুধবার বাসিন্দারা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং মর্গের দায়িত্বে থাকা আধিকারিককে সমস্যার মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়ার লিখিত দাবি জানান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গর্তের মধ্যে এক সঙ্গে মৃতদেহগুলি কয়েক দিন ধরে পড়ে থাকায় কুকুর দেহাংশ খুবলে খাচ্ছে। বিষয়টি অমানবিক। বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সমস্যা নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন প্রধাননগরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তারা। তাঁরা অভিযোগ তোলেন।

Advertisement

এ দিন, বাসিন্দারা বলার পর দেহগুলি মাটি চাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

কিন্তু এই দেহ সৎকারের দায়িত্ব কার, তা নিয়ে তর্ক শুরু হয়েছে।

Advertisement

মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের চিকিৎসক তথা মর্গের দায়িত্বে থাকা রাজীব প্রসাদ বলেন, ‘‘অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের মৃতদেহ পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে নিয়ে যাচ্ছে না। দেহগুলি সৎকার করার দায়িত্ব পুলিশের। তারা না করায় মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে করতে হচ্ছে। পরিকাঠামো যথাযথ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, বাস্তবে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যে সব ব্যক্তি মারা গিয়েছেন এবং যাঁদের পরিজনেরা নিতে আসেননি সেগুলি হাসপাতালের তরফে সৎকার করা হয়। কিন্তু যেগুলি পুলিশি মামলা সংক্রান্ত সে সব ক্ষেত্রে পুলিশেরই দায়িত্ব মৃতদেহগুলি সৎকারের ব্যবস্থা করার। পুলিশ অবশ্য ওই যুক্তি মানতে চায়নি। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘অজ্ঞাতপরিচয় কারও মৃতদেহ ১০ দিন মর্গে রেখে দেওয়ার কথা। এর পর কেউ না এলে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফেই সৎকারের ব্যবস্থা করার কথা। ওই কাজ পুলিশের নয়।’’

ফরেন্সিক বিভাগের একাংশের মতে মর্গের পিছনে অংশে মৃতদেহ মাটি চাপা দিতে যথাযথ পরিকাঠামো নেই। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত অজ্ঞাত পরিচিত বা পরিবারের লোকেরা নিতে না এলে সেই সমস্ত দেহ সৎকার করতে দেহ পিছু ৫০ টাকা সরকারের তরফে বরাদ্দ হয়। সেই টাকায় ওই কাজ করতে রাজি নন কর্মীরা। এলাকার বাসিন্দা কানাই দাস, উজ্জ্বল বৈদ্য, মোহিত রায়রা জানান, মাটি চাপা না দিলে কুকুরে মৃতদেহ খুবলে খাচ্ছে। অনেক সময় দেহাংশ মুখে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাওয়াখালি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক আনন্দ সরকার জানান, গত দুদিন ধরে দুর্গন্ধের জেরে মিড ডে মিল খেতে পারছে না পড়ুয়ারা। স্কুল আগেই ছুটি দিতে হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন