‘মেরে ফেলা হল আমার ছেলেকে’

মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে ভবতোষ এবং তাঁর পরিবার দাবি করেন, তাঁর ছেলে শ্রেয়ানের মারা যাওয়ার পিছনে নার্সিংহোমের গাফিলতিই রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
Share:

নার্সিংহোমে ভাঙচুর। —ফাইল চিত্র

উত্তরায়ণ উপনগরীর নার্সিংহোমের ডাক্তার ছট পুজোর ছুটিতে যাবেন শুনে গুরুতর আহত পাঁচ বছরের শিশুকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল পরিবার। কিন্তু পরিবারকে আশ্বস্ত করার পরেও চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে বলে দাবি রানিগঞ্জ-পানিশালি পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা ভবতোষ মণ্ডলের। তাঁর পাঁচ বছরের শিশুপুত্র গত রবিবার মারা যাওয়ার পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সোমবার নার্সিংহোম ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। বুধবার ওই পরিবার জানায়, দিদি কে বলো সাইটেও অভিযোগ করবেন। ও দিকে হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় হতাশ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে ভবতোষ এবং তাঁর পরিবার দাবি করেন, তাঁর ছেলে শ্রেয়ানের মারা যাওয়ার পিছনে নার্সিংহোমের গাফিলতিই রয়েছে। নার্সিংহোমের স্থায়ী নিউরো চিকিৎসক ছুটিতে যাবেন শুনে তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে বলেছিলেন, রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নেবেন। ভবতোষ বলেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম, পাশেই নিউরো চিকিৎসার নার্সিংহোম রয়েছে, সেখানে বা এয়ার অ্যম্বুল্যান্সে করে অন্যত্র নিয়ে যাই। কিন্তু আমাদের কর্তৃপক্ষ বলেন, অন্য কোথাও ভাল চিকিৎসা হবে কী ভাবে, আমাদের এখানেই প্রবীণ চিকিৎসকরা আছেন। ঠকিয়ে মেরে ফেলা হল আমার ছেলেকে। দিদিকে বলো সাইটে জানাব।’’ গত ৩১ অক্টোবর বাতাসিতে বাড়ির সামনে খেলার সময় ট্রাক্টরের ধাক্কায় জখম হওয়ার পর বাচ্চাটিকে মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে আনা হয়েছিল।

শ্রেয়ানের পরিবারের দাবি, রোগীর প্রথম স্ক্যান রিপোর্ট ঘটনার দু’দিন পরে অন্য চিকিৎসকদের দেখিয়ে দ্বিতীয় মতামত নেন। শ্রেয়ানের মাসতুতো জ্যেঠু জয়গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রথম স্ক্যান রিপোর্ট দেখেই অন্য চিকিৎসকরা দাবি করেছিল, বাচ্চার অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। কিন্তু এই নার্সিংহোম তা করেনি, চিকিৎসক ছুটিতে যাবে বলেই। তার বদলে লক্ষ লক্ষ টাকার পরীক্ষা রোজ করে গিয়েছে।’’ যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, মাথার খুলি অনেকগুলি জায়গায় ভেঙে ছিল এবং ব্রেন ফুলে গিয়েছিল বলে অস্ত্রোপচার করা করা সম্ভব ছিল না।

Advertisement

ওই নার্সিংহোমের কলকাতার কর্তারা মঙ্গলবারই নিরপেক্ষ তদন্ত এবং নার্সিহোম ভাঙচুরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানান রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে। পরে তাঁরা পুলিশ সুপারের সঙ্গেও দেখা করেন। যদিও সেই ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। দুই তরফেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগের তদন্তও শুরু করেছে দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পুলিশ সূত্রে খবর, কারা ভাঙচুর করেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন