গাছ নেই, সীমান্তের ওপারে ছুটছে মেঘ

রবিবার বালুরঘাটের আকাশে জলভরা মেঘের পিছনে ধাওয়া করে হিলি সীমান্তে গিয়ে চাক্ষুস উপলব্ধি এটাই। সীমান্তের ওপারে ছুটে চলেছে ওই মেঘ। কিন্তু কেন? বাংলাদেশের দিকের বনাঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃক্ষরাশি মেঘকে আকর্ষণ করে বালুরঘাট থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৯
Share:

রাস্তায় নামলেই যেন গনগনে উনুনের আঁচ। সকাল থেকে প্রখর রোদের তাপে নাজেহাল দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর চোখ আটকে আকাশের দিকে। জল ভরা মেঘের ইতিউতি আনাগোনা দেখে বাসিন্দারা সবে বৃষ্টির আশা করছেন। কিন্তু কালো মেঘ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের দিকে পগারপার।

Advertisement

রবিবার বালুরঘাটের আকাশে জলভরা মেঘের পিছনে ধাওয়া করে হিলি সীমান্তে গিয়ে চাক্ষুস উপলব্ধি এটাই। সীমান্তের ওপারে ছুটে চলেছে ওই মেঘ। কিন্তু কেন? বাংলাদেশের দিকের বনাঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃক্ষরাশি মেঘকে আকর্ষণ করে বালুরঘাট থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

হিলির বাসিন্দা আশুতোষ রায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সবুজের দেশ। গাছগাছলিতে ভরা। সেখানে এ জেলায় গাছ কই? চার দিক তো ধুধু প্রান্তর।’’

Advertisement

অভিযোগ, চলতি বনমহোৎসবে দক্ষিণ দিনাজপুরে আর পাঁচটা বছরের মতোই নিয়মরক্ষার বনসৃজন সপ্তাহ পালন করেছে বনদফতর। রবিবারেও জেলায় বৃক্ষরোপণের সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ দেখা যায়নি। বালুরঘাটের রেঞ্জার আব্দুর রেজ্জাককে একাধিক বার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। দফতরের ল্যান্ডলাইনেও সাড়া মেলেনি।

জেলার বংশীহারির দৌলতপুর থেকে বালুরঘাট হয়ে হিলি পর্যন্ত প্রায় ৯৫ কিলোমিটার রাস্তা সাত বছর আগে টু-লেন হওয়ার সময়ে প্রচুর পুরনো গাছ কাটা পড়েছে। ফের রাস্তটি ফোর-লেন করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র সরকারের সংশ্লিষ্ট সড়ক দফতর। অথচ বৃক্ষচ্ছেদনের পরে পর্যাপ্ত গাছ লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ। যে ভাবে দ্রুত কংক্রিটের শহরে পরিণত হচ্ছে বালুরঘাট, তাতে গাছ লাগানোর উদ্যোগ পুরসভাকে নিতে হতো। তারাও উদাসীন বলে অভিযোগ। ফলে বর্ষণহীণ হয়ে সুখা অঞ্চলে পরিণত হয়ে পড়েছে জেলা।

আষাঢ়েও বৃষ্টি নেই দেখে প্রমাদ গুনছে কৃষি দফতর। জেলা কৃষি উপ-অধিকর্তা জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমন ধান রোয়া ও পাট পচানোর কাজ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। জেলায় দেড় লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান চাষ হয়। বৃষ্টির উপরই মূলত নির্ভর করেন চাষিরা।’’ বর্তমানে শুকিয়ে যাওয়া বীজতলা নিয়ে আকাশে জলভরা মেঘের দিকে তাকিয়ে চাষিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন