বর্ষা আসলেই ঝরণার জলের সঙ্গে হাজির হয় তারা। লালচে রঙের ছোট আকারের ৫০ থেকে ৬০ গ্রাম ওজনের এই কাঁকড়ার দেখা পাওয়া যায় ডুয়ার্সের পাহাড়ি ঝোরায়। বর্ষার তিন থেকে চার মাস ডুয়ার্স জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন ঝোরায় পাওয়া যায় এদের়। সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে ক্রেতাদের মধ্যে এদের চাহিদা তুঙ্গে। অনেক ক্রেতাই ইলিশের পাশাপাশি খোঁজ করছেন কাঁকড়ারও।
ডুয়ার্সের বড় বড় হাটগুলোতে একটু খুঁজলেই কাঁকড়ার দেখাও মিলছে। সামুদ্রিক কাঁকড়ার থেকে অনেক সস্তা এই কাঁকড়া ১০০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পর্যটকদের পাতে স্বাদের বৈচিত্র্য আনতে এবার সেই কাঁকড়া নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সমুদ্রে বেড়াতে গেলে যেমন কাঁকড়ার বাহারি পদ আলাদা আকর্ষণ আনে, ডুয়ার্সের ক্ষেত্রেও সেই ভাবনা রয়েছে তাঁদের।
ডুয়ার্সের ১০ বছর ধরে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়। গরুমারা ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেনর কার্যকরী সভাপতি অনিন্দ্যবাবু বলেন, ‘‘সামুদ্রিক কাঁকড়ার ও ডুয়ার্সের কাঁকড়ার মধ্যে স্বাদের তফাত রয়েছে। বর্ষাকালে যাঁরা ডুয়ার্সে বেড়াতে আসছেন তাঁদেরকে আমরা কিছুটা প্রচারের মত করেই কাঁকড়ার পদ দিতে চাইছি।’’ ডুয়ার্সের বর্ষাকালীন পর্যটনকে ধীরে ধীরে প্রচারের আলোতে আনার চেষ্টা চলছে। সেই মুহূর্তে বর্ষাতেই পাওয়া যায় এমন এক ভিন্ন স্বাদের পদ পর্যটকদের পাতে পড়লে তা সেই ভ্রমণকে স্মরণীয় করে রাখবে বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের বাটাইগোলের বাসিন্দা রামলাল তাঁতি নিজেই কাঁকড়া ধরে বাজারে বিক্রি করেন। বর্ষার তিনমাসই তিনি একাজ করেন। রামলাল বলেন, ‘‘কাঁকড়া অনায়াসেই সাতদিন জ্যান্ত রেখে দেওয়া যায় ফলে অন্য মাছের মত অনেকদিন রেখে খেলে এর স্বাদবদল হবে না।’’ একবার ডুয়ার্সের কাঁকড়ার তৈরি পদ খেলে তা জিভে লেগে থাকবেই বলেই দাবি রামলালের। সমুদ্রের একেবারে উল্টো পরিবেশে এসেও কাঁকড়ার লোভনীয় পদ হয়তো সমুদ্রের সঙ্গে পাহাড়কে মিলিয়ে দেবে বলেই আশা ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীদের।