সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গের নানা রাস্তায় সেনা জওয়ানদের গাড়ি পরীক্ষা করতে দেখে হকচকিয়ে যান অনেকেই। কারণ, দার্জিলিং জেলার বিভিন্ন এলাকার শুক্রবার সকাল থেকেই জাতীয় সড়ক ও টোলপ্লাজায় সেনা জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়। বিষয়টি দেখেই জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা সেনা বাহিনীর উত্তরবঙ্গের ৩৩ কোরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইতিমধ্যে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেশি রাত থেকেই টোল প্লাজায় গিয়ে সেনা জওয়ানদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে। দার্জিলিং জেলার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ঘোষপুকুর টোলপ্লাজায় ভোর থেকে সেনা মোতায়েন হয়ে যায়। প্রতিটি গাড়ির নম্বর লেখা, নির্দিষ্ট স্টিকার সেঁটে দেওয়াও চলতে থাকে।
দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের পঞ্চনই সেতুতে এবং জলপাইগুড়িগামী ৩১-ডি জাতীয় সড়কের নৌকাঘাট মোড়েও রীতিমত ক্যাম্প করে সেনা বাহিনীকে গাড়ির নম্বর নথিভুক্ত করতে দেখা গিয়েছে। জলপাইগুড়ির ডামডিম এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে সেনা জওয়ানরা প্রতিটি বেসরকারি গাড়ি, বাস থামিয়ে স্টিকার সেঁটে দেন। আলিপুরদুয়ারের কাছে চার লেনের মহা সড়কের টোল প্লাজাতেও সেনা জওয়ানদের দেখা যায়। সেনাবাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে, কালিম্পঙের এসডিওকে বিষয়টি জানানোও হয়েছিল। তিনি দু’জন আধিকারিককে ওই কাজে পাঠিয়েও ছিলেন। সেই নথিও এ দিন সেনার তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘‘জেলার বেশ কিছু জায়গায় সেনা জওয়ানরা গাড়ির নম্বর নথিভুক্ত করা শুরু করেছেন বলে খবর পেয়েছি। তবে আমরা সেনা বাহিনীকে এসব করার জন্য কোথাও কোনও অনুমতি দিইনি। বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কোথায় কোথায় এমন করা হয়েছে, তার তালিকা তৈরি হচ্ছে।’’
ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে সেনাবাহিনীর গতিবিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের টুইটারে প্রতিবাদ পর্যন্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন বিষয়টি নিয়ে লোকসভা, রাজ্যসভাও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেনার যুক্তি, বহু জায়গায় পুলিশ-প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। বিষয়টি নতুন কিছু নয়, প্রতিবছরই এমন সেনার তরফে এমন ‘মহড়া’ হয়ে থাকে।