North Bengal

সচেতনদের তৎপরতা

এক স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ, এখনও এলাকাকে কনটেনমেন্ট জ়োন করতে প্রশাসনের তরফে তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০৪:৫২
Share:

সবেধন: এই ব্যারিকেডেই আটকানো হয়েছে পথ। মাঝেরডাবরির উত্তর পানিয়ালগুড়ির তিরকিপাড়ায়। ছবি: নারায়ণ দে

Advertisement

কোথাও তৎপর প্রশাসন, কোথাও উদ্যোগী বাসিন্দারাই। এমনই সচেতনতার দুই চিত্র দেখা গেল আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে।

উদ্যোগী বাসিন্দারাই

Advertisement

ফালাকাটা: এক স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ, এখনও এলাকাকে কনটেনমেন্ট জ়োন করতে প্রশাসনের তরফে তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ফালাকাটার অরবিন্দপাড়ায়। ওই এলাকাতেই করোনায় আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি। তবে প্রশাসনের তৎপরতা দেখা না গেলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে শনিবারও স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি সংলগ্ন গলিপথটি বাঁশ দিয়ে ঘেরা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা পারঙ্গেরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘করোনা পজ়িটিভ এলেই আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ির রাস্তা কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু একজন স্বাস্থ্যকর্মীর দু’বার পজিটিভ আসার পরেও প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই। তাই আমরা নিজেরাই সচেতনভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছি।’’ প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এলকাটিকে কনটেনমেন্ট জ়োন করার প্রক্রিয়া চলছে।’’

ভরসা স্থানীয়রাই

ভাটিবাড়ি: করোনা সংক্রমণ এড়াতে আলিপুরদুয়ারের ভাটিবাড়িতে পুরোপুরি লকডাউনে সামিল হলেন ব্যবসায়ী ও এলাকার বাসিন্দারা। শুক্রবারই ওষুধের দোকান ও যানবাহন চলাচল বাদে সব দোকান-বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সম্প্রতি সেনাবাহিনীতে কর্মরত এলাকার এক যুবক বাড়ি ফিরলে তাঁর করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যুবক এলাকার অনেকের সংস্পর্শেও আসেন। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় এলাকার ব্যবসায়ী সমিতি। যার জেরে শনিবার স্তব্ধ ছিল এলাকা। সংক্রমিত যুবকের বাড়িতে এ দিন খাদ্য সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছে দেন স্থানীয় তৃণমূলের কর্মীরা।

ব্যারিকেড কোথায়

মাঝরডাবরি: স্বাস্থ্য দফতর ঘোষণা করলেও পূর্ব মাঝরডাবরি এসসি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ অংশে শনিবারও লকডাউনের প্রভাব দেখা গেল না। অভিযোগ, এ দিনও ওই এলাকায় অবাধে লোকজন যাতায়াত করেছে। কোনও ব্যারিকেডও চোখে পড়েনি বলে দাবি। তবে মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর পানিয়ালগুড়ির ১১/২৪৫ নম্বর পার্টে অবশ্য লকডাউন চলছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সীমা মিনজ বলেন, ‘‘এলাকায় পুলিশের নজরদারিও চলছে।’’

বাজার পুরোই বন্ধ

বীরপাড়া: এলাকার এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দিন কয়েক আগেই বীরপাড়ার ভানুনগরের একাংশকে কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। বীরপাড়া বাজারের একাংশও এই জ়োনের আওতায় ছিল। কিন্তু শনিবার ওই অংশ ছাড়াও বীরপাড়া বাজারের বাকি অংশও কার্যত বন্ধই ছিল। সেই সঙ্গে প্রবল বৃষ্টির জেরে সুভাষপল্লি ও বান্দাপানির হাটখোলাতেও এ দিন কাউকেই বাইরে বার হতে দেখা যায়নি। বৃষ্টির মধ্যেই পুলিশ টহলদারি ও প্রচার চালায়।

যেতেই হচ্ছে দফতরে

মেখলিগঞ্জ: কন্টেনমেন্ট জ়োন হওয়া সত্ত্বেও এলাকায় যাতায়াত কতটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, তা নিয়ে মেখলিগঞ্জ শহরের বাসিন্দাদের একাংশ প্রশ্ন তুললেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেখলিগঞ্জ পুরসভা এলাকায় চার জন করোনা আক্রান্ত বলে খোঁজ মিলতেই সেখানকার ১ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড দু’টিকে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই দু’টি এলাকার বাসিন্দাদের কেউ যেমন বাইরে বার হতে পারবেন না, তেমনই কেউ সেখানে ঢুকতেও পারবেন না। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে এক দম্পতি একজন স্থানীয় হাসপাতালের ঠিকাদার সংস্থার কর্মী। ছুটি না মেলায় দুজনই কাজের জন্য বাইরে বার হতে হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই কর্মীদের এক জনের দাবি, ছুটি না মেলায় কাজে যেতেই হচ্ছে। মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের সুপার কাশীনাথ পাঁজা জানান, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে এটুকু বলতে পারি ওই জোন এলাকার বাসিন্দা কয়েক জন সিকিউরিটি কর্মীকে ইতিমধ্যে ছুটি দেওয়া হয়েছে।’’

সাহায্যের হাত

কোচবিহার: কোচবিহার সদরের পুন্ডিবাড়ির ডাঙাপাড়া এলাকাতেও রয়েছে কন্টেন্টমেন্ট জ়োন। এলাকায় বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছে। যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ আছে। কোচবিহার-২ পঞ্চায়েত সমিতির গোপাল সরকার বলেন, “এলাকায় পুরোপুরি ভাবে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। বাড়িতে বসেই যাতে নিত্যপণ্য পান, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।” বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য বলছেন, কনটেনমেন্ট জ়োন হওয়ায় অনেকেরই নানা সমস্যা হচ্ছে। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “এলাকার বাসিন্দাদের যাতে সমস্যা না হয় দেখা হচ্ছে।”

(তথ্য সহায়তা: পার্থ, অরিন্দম, রাজু, দেবব্রত ঘোষ ও সজল দে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন