আরম্ভটা শুভ হল না খাদ্য নিরাপত্তা আইনের।
একে তো পরপর তিন বার পিছিয়ে গেল নতুন ব্যবস্থা শুরুর দিন। শেষ অবধি আগামী বুধবার (২২ এপ্রিল) নতুন নিয়মে রেশন বিতরণের ঘোষণা হলেও, দক্ষিণ দিনাজপুরের অর্ধেকেরও বেশি গ্রাহক সে দিনও রেশন তুলতে পারবেন না। কারণ ডিজিটাল রেশন কার্ড এখনও পাননি। নতুন প্রকল্পের ধাক্কায় এ মাসের গোড়ায় রেশনের চাল-গম পাননি জেলার কেউ। কবে সকলের রেশন মিলবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলাবাসী।
দক্ষিণ দিনাজপুর ছোট জেলা, জনসংখ্যা কম। প্রকল্পের ‘পাইলট’ করার জন্য তাই এই জেলাকেই বাছা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাতেই প্রশাসনের ঘাম ছুটে যাচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘোষণা করেন, পয়লা এপ্রিল থেকে শুরু হবে প্রকল্প। কিন্তু সে দিন দেখা যায়, নতুন কার্ড বিলি শুরুই হয়নি। তখন জেলাশাসক ঘোষণা করেন, প্রকল্পের শুরু হবে পয়লা বৈশাখ। সেই দিনও কাজ শুরু হয়নি। খাদ্য দফতর আশ্বাস দেয়, চাল-গম বিলি হবে পরবর্তী সোমবার (২০ এপ্রিল) থেকে। এ দফাও ফের দু’দিন পিছিয়ে গেল প্রকল্প শুরুর দিন।
তবে বুধবার রেশন দোকান থেকে ওই প্রকল্পের উপভোক্তারা একসঙ্গে তিন সপ্তাহের খাদ্যশস্যের সরবরাহ পাবেন বলে খাদ্য দফতর জানিয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় বলেন, ‘‘খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে বরাদ্দ খাদ্যশস্য জেলায় চলে এসেছে। ডিস্ট্রিবিউটারদের তা বরাদ্দ করে দেওয়া হয়েছে।’’ বকেয়া দুই সপ্তাহের প্রাপ্য শস্যের সঙ্গে চলতি সপ্তাহের বরাদ্দও তাঁরা পাবেন।
এই ব্যবস্থায় ফাঁপরে পড়েন রেশন ডিলাররা। এক সঙ্গে তিন সপ্তাহের শস্য মজুেতর মতো জায়গা অধিকাংশ ডিলারের নেই, অভিযোগ করেন দক্ষিণ দিনাজপুর রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ভূপেশ ঘোষ। এমনিতেই টানা দু’সপ্তাহ গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়ায় বিরক্ত রেশন ডিলাররা। তার উপর এ সপ্তাহেও বুধবার থেকে রবিবার আধবেলা, এই সময়টুকুই তাঁরা রেশন বিলি করতে পারবেন। কারণ খাদ্য তুলে মজুত করতেই তাঁদের সোম ও মঙ্গলবার কেটে যাবে।
তার উপর ডিলারদের উপরে গিয়ে পড়বে সেই গ্রাহকদের ক্ষোভ, যাঁরা এখনও নতুন কার্ড পাননি। কুশমন্ডি ব্লকে প্রায় ৭০% উপভোক্তার মধ্যে ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি হয়েছে। জেলা সদর বালুরঘাট ব্লকে এখনও কার্ড বিলি শুরুই হয়নি। বাকি সাতটি ব্লকে অর্ধেক কার্ডই বিলি হয়নি।