শোক: পুত্র-সহ স্মৃতি মোদক।
বাড়িতে বৃদ্ধ মা, ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী ও ১২ বছরের ছেলে। তাঁদের সবাইকে নিয়ে ছোট সংসারের একমাত্র ভরসা ছিলেন জয়দীপ মোদক (৪১)। স্ত্রীয়ের ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে তাঁকে মাঝেমধ্যেই মুম্বই নিয়ে যেতেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ বৃহস্পতিবার সন্ধের ঘটনা পুরো পরিবারকে ছন্নছাড়া করে দিয়েছে। বাবার জন্য ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে ছোট্ট সাত্ত্বিক।
বৃহস্পতিবার সন্ধেয় সুভাষপল্লির বাসিন্দা জয়দীপ মোদক বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বিমা সংস্থায় এজেন্টের কাজ করতেন তিনি। জলেশ্বরী বাজারে গ্রাহকের থেকে বিমার টাকা আনতে গিয়েছিলেন। বাইপাসের পাশে ফলের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই সময় ধেয়ে আসা ট্রাক উল্টে পড়ায় সেটির নীচে চাপা পড়ায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জয়দীপের। পরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। আকস্মিক এমন ঘটনায় মোদক পরিবারের মাথায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়েছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন জয়দীপ। পাড়ার সকলের প্রিয় ছিলেন তিনি। ঘটনার পর রীতিমতো শোকস্তদ্ধ গোটা সুভাষপল্লি এলাকা।
পরিবার সূত্রে খবর, জয়দীপের স্ত্রী ক্যানসারের চিকিৎসা করাচ্ছেন। মাঝেমধ্যেই তাঁকে মুম্বই যেতে হয়। এখন স্বামীর মৃত্যুতে কী ভাবে সংসার চলবে সেটাই ভাবছেন স্মৃতি মোদক। তার উপর রয়েছে ব্যয়বহুল চিকিৎসার চিন্তা। তাঁর কথা, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাজের জন্য বেরিয়েছিলেন জয়দীপ। কিছুক্ষণের মধ্যে খবর আসে দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমার অসুস্থতা তো আছেই। এখন কী ভাবে ছেলেকে নিয়ে সংসারটা চলবে সেটাই ভাবছি।”
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে আড়াই লক্ষ টাকার চেক পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। জয়দীপের দাদা সুব্রত মোদক বলেন, “জয়দীপের অবর্তমানে পুরো পরিবার একা হয়ে গেল। তাঁর আয়েই সংসার চলত। এখন সরকারের কাছে আবেদন তাঁর স্ত্রীয়ের জন্য যদি কোনও চাকরির ব্যবস্থা করা যায়।”
শনিবার সকালে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শহরে ফিরে জয়দীপের বাড়ি যাওয়ার কথা রয়েছে পুরসভার প্রশাসক গৌতম দেবেরও।