আছাড় খেয়েই ঝকঝকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

বাসিন্দারা বলছেন, বাইক শুধু নয়, সাইকেলে বা হেঁটে গেলেও রাস্তায় আছাড় খেতে হচ্ছে। ভূতনির তেতরুটোলার বছর কুড়ির রবি মণ্ডল কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। জন্ম থেকেই ভূতনির বাসিন্দা। তাই এলাকার রাস্তাঘাট নিয়ে ধারণা থাকায় এই বর্ষায় দক্ষিণ চণ্ডিপুরের নাসা গ্রামের ভূতনি হাসপাতালে যেতে চাইছিলেন না।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৬
Share:

কর্দমাক্ত: এমন রাস্তায় আটকে যায় অ্যাম্বুল্যান্স। নিজস্ব চিত্র

প্রসব যন্ত্রণা নিয়েই মাটি-কাদার রাস্তায় ভ্যানে করে আসতে হয়েছে হাসপাতালে। ভূতনির উত্তর চণ্ডিপুরের গঙ্গাধরটোলার বন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘কী ভাবে যে এসেছি তা কেবল ভগবানই জানেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ফুলহার নৌকোয় পেরিয়ে মানিকচক যাওয়াই বোধহয় ভালো।’’

Advertisement

বাসিন্দারা বলছেন, বাইক শুধু নয়, সাইকেলে বা হেঁটে গেলেও রাস্তায় আছাড় খেতে হচ্ছে। ভূতনির তেতরুটোলার বছর কুড়ির রবি মণ্ডল কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। জন্ম থেকেই ভূতনির বাসিন্দা। তাই এলাকার রাস্তাঘাট নিয়ে ধারণা থাকায় এই বর্ষায় দক্ষিণ চণ্ডিপুরের নাসা গ্রামের ভূতনি হাসপাতালে যেতে চাইছিলেন না। এলাকার হাতুড়েরই ওষুধ খাচ্ছিলেন। কিন্তু জ্বর বাড়াবাড়ি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত খুড়তুতো দাদা রমেন মণ্ডলের মোটরবাইকে চেপেই রওনা দিয়েছিলেন হাসপাতালে। তেতরুটোলা থেকে সরকারটোলা হয়ে হাসপাতালের দিকে যতই বাইকে এগিয়েছে ততই তাঁদের বিড়ম্বনা বেড়েছে। মাঝে মাঝে যতটুকু সিমেন্টের ঢালাই রাস্তা পেয়েছেন ততটুকু বাইক চলেছে। বাকি একেবারে এঁটেল মাটির রাস্তায় কখনও রবিকে বাইক থেকে নামতে হয়েছে এক হাঁটু জলে, কখনও বা থিকথিকে কাদায়। আর রমেনকে ওই জল-কাদায় বাইক ঠেলে নিয়ে যেতে হয়েছে।

বাল্লিটোলাতে দু’জনেই আছাড়ও খেয়েছেন। উঠে ফের রওনা। কিন্তু গোবরিটোলাতে গিয়ে সেই এঁটেল মাটির পিচ্ছিল রাস্তায় বাইক সহ আবারও আছাড়। আছাড় খেতে খেতে শেষপর্যন্ত পৌঁছলেন হাসপাতাল।

Advertisement

রাস্তায় এ হেন বিড়ম্বনার জেরে বেলা তিনটে বেজে যাওয়ায় আউটডোর বন্ধ হয়ে যায়। তাই নভেম্বর থেকে চালু হওয়া ইন্ডোরেই গেলেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ। একেবারে ঝাঁ-চকচকে হাসপাতাল। নির্দিষ্ট ঘরে ডাক্তারবাবু রাজেশ সাহা ছিলেন। রবির চিকিত্সা করলেন। রবি বা রমেনের ওই কাদা মাখা চেহারা দেখে কিন্তু এতটুকুও বিচলিত হননি ডাক্তার রাজেশবাবু। তিনি বললেন, ‘‘এখানে যা রাস্তার পরিস্থিতি, এটাই হবে।’’

শঙ্করটোলা মোড় বাঁধ রোডটি মোটামুটি চলার উপযোগী থাকলেও তেতরুটোলা থেকে করমুটোলা, বাল্লিটোলা হয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার বা আটমইয়া থেকে খসবরটোলা, ভূতনি থানা হয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত চার কিলোমিটার সব মাটির রাস্তাই একেবারেই বেহাল। অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত আটকে যাচ্ছে। জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘দক্ষিণ চণ্ডিপুর ও হীরানন্দপুর থেকে হাসপাতাল যাওয়ার রাস্তা দু’টি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে পাকা করা হবে। পুজোর পর কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন