মেডিক্যাল কাউন্সিলের দেওয়া সার্টিফিকেট হারিয়ে গিয়েছে বলে প্রথমে পুলিশে ডায়েরি করেছিলেন। পরে তা দেখিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে চিকিৎসক হিসেবে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন ভুয়ো ডাক্তার খুশিনাথ হালদার। আলিপুরদুয়ারের রাঙালিবাজনা উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই চিকিৎসক বর্তমানে কলকাতায় সিআইডি হেফাজতে।
সূত্রের খবর, তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, মেডিক্যাল কাউন্সিলের দেওয়া অন্য এক ডাক্তারের সার্টিফিকেটে নিজের নাম বসিয়ে তা জেরক্স করিয়েছিলেন। সেই জেরক্স দেখিয়েই কাজ হাসিল করতেন তিনি। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করতে ট্রেন থেকে তা হারিয়ে গিয়েছে বলে জিআরপি থানায় ডায়েরি করিয়ে প্রতিলিপিতে পুলিশের সই-সিলমোহর লাগিয়ে নিয়েছিলেন। যে কোনও চাকরির ইন্টারভিউতে সেটাই দেখাতেন খুশিনাথ।
দিন কয়েক আগে সিআইডি খুশিনাথকে দলগাঁও থেকে গ্রেফতার করে। ভুয়ো সার্টিফিকেট দেখিয়ে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে প্রায় ৬ বছর কাজ করেছেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে জলপাইগুড়ি জেলায় চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত হন ওই চিকিৎসক। সেই সময় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলেন স্বপন সরকার। তিনি বর্তমানে স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা। স্বপনবাবু বলেন, “২০১১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে জলপাইগুড়িতে কাজে যোগ দিয়েছিলাম। ওই ভুয়ো চিকিৎসক আমার সময় বা আগে নিয়োগ হয়েছিল কি না তা মনে নেই।” অবিভক্ত জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার একাধিক জায়গায় খুশিনাথ কাজ করেন।
গত এপ্রিলে রাজ্যের এক স্বাস্থ্যকর্তা বিষয়টি আলিপুরদুয়ার জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কাছে জানতে চাইলে টনক নড়ে তাঁদের। তখন খুশিনাথকে ডেকে জেরা করায় তিনি স্বীকার করেন, তাঁর শংসাপত্রটি জাল। ২৬ এপ্রিল বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সফর চলাকালীন আমার বাবা অসুস্থ ছিলেন। আমি জেলাশাসককে জানাই, বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানাব। তাঁর আগেই সিআইডি চলে আসে। নিয়োগ করে ঠকে গিয়েছি।”
পূরণ শর্মা জানান, ২০১৩ সালে জলপাইগুড়ি জেলায় ডেপুটি সিএমওএইচ পদে যোগ দেন। তার আগে ২০১১ তে খুশিনাথ হালদার জলপাইগুড়ি জেলায় কাজে যোগ দিয়েছিল। ২০১৫ তে আলিপুরদুয়ার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দায়িত্ব নিয়ে তিনি চলে যান।