কেশবচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
ঠিক প্রসবের আগে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মাত্র বছর বাইশের এক তরুণী। চিকিৎসকরা জানান, এই রোগের নাম স্ট্যাটাস এপল্যাম্পটিকাস। এই অসুখে অনেক সময়ই প্রসূতির জীবন পর্যন্ত সংশয় হয়ে পড়ে। কিন্তু রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক কেশবচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বিপদ ঘটতে দিলেন না। তিনি চায়না মণ্ডল নামে ওই প্রসূতির রক্তচাপ আগে স্বাভাবিক করেন। তারপরে সম্পূর্ণ অচেতন করে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। চায়না তার পরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি ও তাঁর সন্তান সুস্থও রয়েছেন।
এই ঘটনার পরে কেশববাবুকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে, ওই চিকিত্সককে পুরস্কৃত করার জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সুপারিশ করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামলকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই রোগে ঠিক মতো সামাল দেওয়া না গেলে আধ ঘণ্টার মধ্যে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কেশববাবুর দায়িত্ববোধ ও দক্ষতায় সবাই সুস্থ রয়েছে।’’ চিকিৎসক প্রদ্যোৎ শূর বলেন, ‘‘এই প্রসূতির আগে রক্তচাপ ছিল এমন হতে পারে। প্রসবের সময় রক্তচাপ চড়চড় করে বেড়ে গিয়ে এমন অবস্থা হতে পারে।’’ তাঁর অনুমান, এই রোগীর যে রক্তচাপ ছিল, তা আগে তাঁর পরিবারের লোকজন জানতেন না। আগে থেকে ঠিক মতো চিকিৎসা হলে এমন সমস্যা এড়ানো যায়।
চায়নার বাড়ি কালিয়াগঞ্জের কুড়িয়া ডাঙাপাড়া এলাকায়। শনিবার সকালে হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করেন পরিবারের লোকেরা। কেশববাবুর বক্তব্য, চায়নাকে ওটি-তে ঢোকানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর খিঁচুনি শুরু হয়। পরীক্ষা করে জানা যায় তিনি বিরল রোগ বলে পরিচিত স্ট্যাটাস একলাম্পটিকাসে আক্রান্ত। রক্তচাপ কমিয়ে তাঁকে স্বাভাবিক করা হয়। কেশববাবু বলেন, ‘‘চায়না ও তাঁর পুত্রসন্তানকে আমরা বাঁচাতে পেরে খুশি।’’