এ বার বলিউড মাতাবেন আরও এক বাঙালি কন্যা

‘পহেলি নজর মে ইসক হুয়া, পহেলা পহেলা নেশা’- এই গানের কলি গেয়ে বলিউডে পা রাখল ডুয়ার্সের মেয়ে ঈশিতা। ঈশিতার ডাক নাম বৃষ্টি। হিন্দি সিনেমার প্লেব্যাক গায়িকা হিসাবে গেয়ে ফেলল দু’টি ছবির তিনটি গানও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৭:৫৬
Share:

গানের স্টুডিওতে ঈশিতা। — নিজস্ব চিত্র

‘পহেলি নজর মে ইসক হুয়া, পহেলা পহেলা নেশা’- এই গানের কলি গেয়ে বলিউডে পা রাখল ডুয়ার্সের মেয়ে ঈশিতা। ঈশিতার ডাক নাম বৃষ্টি। হিন্দি সিনেমার প্লেব্যাক গায়িকা হিসাবে গেয়ে ফেলল দু’টি ছবির তিনটি গানও।

Advertisement

রোহিত চৌধুরী ও ওয়াহেদ আলি পরিচালিত ছবিগুলি মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুণছে। তার মধ্যে একটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে জুলাই মাসের ২২ তারিখে। ঈশিতা তিনটি গানই গেয়েছে জনপ্রিয় গায়ক আলতামাস ফরিদির সঙ্গে। গানগুলি রেকডিং হয়েছে মুম্বাইয়ের লতা মুঙ্গেশকর ও প্লাটিনাম স্টুডিওতে। বলিউডের উঠতি নায়ক রাজ ও উঠতি নায়িকা সঞ্জিতা গান লিপ দেবে ঈশিতার গাওয়া গানে। বলিউডের নতুন ছবির গান গাইবার জন্য ফের ডাক পেয়েছেন ঈশিতা। জুলাই মাসেই আবার গান রেকর্ডিংয়ের জন্য ছুটতে হবে বলিউডে।

ডুয়ার্সের চা বাগান, জঙ্গল-পাহাড় ঘেরা জনপদ থেকে একটি মেয়ে বলিউডে হিন্দি সিনেমার প্লে ব্যাক গায়িকা হিসাবে ঈশিতার আগে কেউ গান গেয়েছে কি না, তার সঠিক তথ্য জানেন না মাদারিহাটের বাসিন্দারা। ঈশিতার এই সাফল্যে গর্বিত তার পাড়া প্রতিবেশীরাও। মাদারিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুশীল দাস বলেন, “আমাদের এলাকার মেয়ে এত বড় সাফল্য পাবে তা ভাবতে গেলে রোমাঞ্চ লাগে। ছোট্ট মাদারিহাটের একটি মেয়ে বলিউডে গিয়ে হিন্দি ছবির গান গাওয়ায় পুরো মাদারিহাট সহ পুরো ডুয়ার্সকে গর্বিত হল। তার আরও বড় সাফল্য কামনা করি।”

Advertisement

মাদারিহাটের মেঘনাথ সাহা কলোনির বাসিন্দা এবং ঈশিতার প্রতিবেশী এলাকার পঞ্চায়েত উত্তম শর্মা গর্বিত হয়ে বলেন, “এই তো সে দিনের ছোট্ট মেয়ে ঈশিতা ওরফে বৃষ্টি যে মুম্বইয়ের স্টুডিওতে হিন্দি ছবির গান গাইল সেই খবরটা শুনেই আমার বুকটা ফুলে উঠেছিল। এখন অপেক্ষায় আছি, ২২ জুলাই কত তাড়াতাড়ি আসে। আমার মতো সবাই সিনেমা রিলিজের অপেক্ষায় দিন গুণছি।”

ছোটবেলা থেকেই আশা ভোঁসলের কন্ঠকে আদর্শ ধরে নিয়ে গানের জগতে পা রাখে আলিপুরদুয়ার জেলার ডুয়ার্সের মাদারিহাটের স্কুল করণিক নীহাররঞ্জন ঘোষের কন্যা ঈশিতা। পাঁচ বছর বয়স থেকেই মায়ের কাছে সঙ্গীতে হাতে খড়ি হয় ঈশিতার। মা রত্নাদেবীও ডুয়ার্সের একজন নজরুল ও লোকসঙ্গীত শিল্পী। তারপর থেকে রবীন্দ্র-নজরুল ও ক্লাসিক্যালের সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু হয় আলিপুরদুয়ারের সঙ্গীত শিক্ষক গৌতম পালের কাছ থেকে। তারপর পড়াশোনার সঙ্গে গানকে জীবনের লক্ষ্য ধরে এগিয়ে চলে সে। দু’বছর আগেই ‘তেরে বিন’ নামে একটি হিন্দি গানের অ্যালবাম করে ঈশিতা। অ্যালবামটি ভালো সাফল্য পায়। তারপর থেকেই বলিউডে প্লে ব্যাক সিঙ্গার হিসাবে গান গাওয়ার সুপ্ত বাসনা জেগে উঠে ঈশিতার মনে।

বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ঈশিতা জানায়, “আশা ভোঁসলে আমার আদর্শ গায়িকা। ছোটবেলা থেকে তাঁর গান আমি পাগলের মতো শুনতাম। স্বপ্ন দেখতাম আশা ভোঁসলের মতো গান গাইব। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। মুম্বাইতে স্টুডিতে গান শোনার পর পরিচালক, প্রযোজক এবং বলিউডের জনপ্রিয় গায়িকা সাধনা সরগম স্টুডিওতে এসে আমার গানের জন্য প্রশংসা করেছেন। তারা আশীর্বাদ করেছেন, ভবিষ্যতে যেন আমি আশা ভোঁসলের মতো গাইতে পারি। তবে যে দু’টি সিনেমায় গান গেয়েছি আইনি কারনে সিনেমা দু’টির নাম এখনই বলা যাবে না। জুলাই মাসের ২২ তারিখে প্রথম ছবিটি রিলিজ হবে।”

মাদারিহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, বীরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করে ঈশিতা এখন ফিজিওলজি অনার্স নিয়ে কোচবিহারের এ বি এন শীল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি হিন্দি বাংলা সঙ্গীতের শিখরে পৌঁছনের লক্ষ্য ঈশিতার। ঈশিতার বাবা-মা জানান, “সেই অর্থে হিন্দি গান শেখার তালিম পায়নি ঈশিতা। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বাড়িতে সাউন্ড সিস্টেমে হিন্দি গান রপ্ত করে সে। নিজের গাওয়া হিন্দি গানের অ্যালবামও তৈরি করে সে। মুম্বইয়ে থাকা এক আত্মীয় মেয়ের গলায় হিন্দি গানের কলি ও কন্ঠ শুনে পরিচালক, প্রযোজকদের ওই গান শোনালেও তাঁরাই তাঁদের ছবিতে গান গাইবার জন্য বৃষ্টিকে ডেকে পাঠায়। সকলের আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা থাকলে বলিউডে গানের জগতে মেয়ে অবশ্যই সাফল্য পাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement